Sunday, April 21, 2019

জামালপুর জেলা পরিচিতি


জামালপুর জেলা বাংলাদেশের মধ্যাংশের একটি জেলা।এই জেলাটি ময়মনসিংহ বিভাগে অবস্থিত। এই জেলাটি পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদীর পশ্চিম পাড় ঘেঁষে অবস্থিত।কৃষি পন্যের জন্য এই জেলাটি  একটি বানিজ্য কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এই জেলাটি সীমান্তবর্তী একটা জেলা। এই জেলাটি ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সাথে রাস্তা দ্বারা সংযুক্ত হয়েছে। এই জেলার মধ্যদিয়ে একটি রেল লাইন চলে গেছে  ঢাকা জেলার দিকে। এই জেলাটি মূলত কৃষি প্রধান একটি জেলা। এই জেলার কৃষি প্রধান ফসলের মধ্যে চাষ হয় ধান, পাট, গম , সরিষা ও চীনাবাদাম ইত্যাদি। তাছাড়া বাংলাদেশের  সবচেয়ে  বড় সার-কারখানা এই জেলাতেই অবস্থিত। ভারত হতে আমদানীকৃত পন্য ও রপ্তানির একমাত্র  বানিজ্য কেন্দ্র এই জামালপুর জেলা।  


এই জেলার নামকরণ :ঐতিহাসিক সূত্রে জানা যায়, দিল্লীর সম্রাট আকবরের রাজ্যত্বকালে (১৫৫৬-১৬০৫) হযরত শাহ জামাল (রহ:) ইয়েমেন থেকে ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে ২০০ অনুসারী নিয়ে এই অঞ্চলে আগমণ করেন।ধর্মীয় নেতা হিসেবে তার নাম  বিস্ত্র লাভ করে। তাই ধারনা করা হয় হযরত শাহ জামালের নামানুসারে এই জেলার নাম হয় জামালপুর।
ভৌগোলিক অবস্থান : এই জেলাটির উত্তরে অবস্থিত ভারতের মেঘালয় রাজ্য ও গারো পাহাড় এবং বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলা, পূর্বে ময়মনসিংহ এবং শেরপুর জেলা, পশ্চিমে যমুনা নদীর তীরবর্তি জেলা সিরাজগঞ্জ, বগুড়া ও গাইবান্ধা  জেলা, দক্ষিণে টাংগাইল জেলা অবস্থিত।

 এই জেলাটি মোট ৭টি উপজেলা নিয়ে গঠিত। উপজেলা সমূহের নাম হলো ১. মাদারগঞ্জ উপজেলা, ২. সরিষাবাড়ি উপজেলা, ৩. মেলান্দহ উপজেলা, ৪. বকশীগঞ্জ  উপজেলা, ৫. দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা, ৬. ইসলামপুর উপজেলা, ৭. জামালপুর সদর। এই জেলায় মোট ইউনিয়ন ৬৮ টি।
 ইউনিয়ন সমূহের নামগুলো হলো : ১. বগারচর, ২. বকশীগঞ্জ, ৩. নীলক্ষিয়া, ৪. ধনুয়া কামালপুর, ৫. মেরুরচর, ৬. সাধুরপাড়া, ৭. বাহাদুরাবাদ, ৮. বাট্টাজোড়, ৯. সাতপোয়া, ১০. পোগলদিঘা, ১১. পিংনা, ১২. কামারবাদ, ১৩. মহাদান, ১৪. দোয়াইল, ১৫. ভাতারা, ১৬. শ্যামপর, ১৭. আওনা, ১৮. আদ্রা, ১৯. চরবানীপাকুরিয়া, ২০.ফুলকোচা, ২১. দুরমুট, ২২.ঘোষেরপাড়া, ২৩. নয়ানগর, ২৪. নাংলা, ২৫. মাহমুদপুর, ২৬. কুলিয়া, ২৭.ঝাউগড়া, ২৮. ডাংধারা, ২৯. চরআমখাওয়া, ৩০. চিকাজানী, ৩১.চৃকাইবাড়ী, ৩২.দেওয়ানগঞ্জ, , ৩৩. পাররামরামপুর, ৩৪. আদারভিটা, ৩৫. বালিজুড়ী, ৩৬. চরপাকেরধা, ৩৭. গুনারীতলা, ৩৮. জোড়খালী, ৩৯. করইচরা, ৪০. ‍সিধুলী, ৪১. বেলগাছা, ৪২. চরপুঠিমারী, ৪৩. চরগোয়ালিনী, ৪৪. চিনাডুলি, ৪৫. গাইবান্ধা, ৪৬. গোয়ালেরচর, ৪৭. কুলকান্দি, ৪৮. নোয়ারপাড়া, ৪৯. ইসলামপুর, ৫০.সাপধরী, ৫১. পার্থশী, ৫২. পলবান্ধা, ৫৩. বাঁশচড়া, ৫৪.ঘোড়াধাপ, ৫৫. দিগপাইত, ৫৬. কেন্দুয়া, ৫৭. ইটাইল, ৫৮. মেষ্টা, ৫৯. লক্ষীরচর, ৬০. নুরূন্দি, ৬১. রানাগাছা, ৬২. শরীফপুর, ৬৩. রশীদপুর, ৬৪.শাহবাজপুর, ৬৫. তিতপল্যা, ৬৬.তুলসীরচর ৬৭. শ্রীপুর ও ৬৮. হাতিভাংগা।

এই জেলার মোট আয়তন ২০৩১. ৯৮ বর্গ কি.মি। এই জেলার মোট জনসংখ্যা ২৩,৮৪,৮১০ জন। যার মধ্যে পুরষ আছে মোট  ১১,৭৪,১০৪ জন  এবং মোট মহিলা আছে ১২,১০,৭০৬ জন (২০১১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী)। এই জেলা মোট সংসদীয় আসন ৫টি।এই জেলার মোট পৌরসভা ০৭টি, প্রেসক্লাব মোট ০৮ টি, পুলিশ স্টেশন আছে মোট ০৮ টি, ফায়ার সার্ভিস মোট ০৫টি ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মোট ০৮ টি।


 এই জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহ :
এই জেলায় মোট  প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫৮৮টি ও রেজি:প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে মোট ৪২৫টি। মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে মোট ৩৪৭ টি, সরকারী মহাবিদ্যালয় মোট ০৫টি ও বেসরকারী মহাবিদ্যালয় মোট ৩১টি, মাদ্রাসা আছে মোট ১৭৭টি যার মধ্যে কামিল ০৫টি, ফাজিল ১২, আলিম ২১টি এবং দাখিল ১৩৯টি। উপজলা  রিসোর্স সেন্টার আছে মোট ০৭টি, ভোকেশনাল স্কুল আছে মোট ১৬টি, বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ ০৭টি, আইন কলেজ আছে মোট ০১টি, ভি.টি.আই আছে মোট ০২টি, পি.টি.আই আছে মোট ০১টি, হোমিওপ্যাথিক কলেজ আছে মোট ০২টি ও ফিসারিজ কলেজ আছে মোট ০১টি।


এই জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ : এই জেলার দর্শনীয় স্থানের মধ্যে আছে যমুনা সার কারখানা, শাহ জামালের মাজার,জামালপুর জামে মসজিদ
, ঝিলবাংলঅ সুগার মিল, দয়াময়ি মন্দির, কৃষি গবেষণা কেন্দ্র ও লাউচাপড়া 
ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
তাছাড়াও এই জেলায় ১টি স্টেডিয়াম আছে যার নাম বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম স্টেডিয়াম।
এই জেলার স্বাস্থ্য সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান সমূহের মধ্যে আছে জেলা হাসপাতাল ০১টি, উপজেলা হাসপাতাল ০৬টি, রেলওয়ে হাসপাতাল আছে মোট ০২টি, ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র আছে মোট ৬৮টি,
ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও প: প: কেন্দ্র আছে মোট ৩২টি, কমিউনিটি ক্লিনিক আছে মোট  ২৭০টি, এ্যাম্বুলেন্স আছে মোট ১৫টি ও কুষ্ঠ ক্লিনিক আছে মোট ০৭টি।
আমার লেখায় কোনো ভূল থাকলে জানাবেন অবশ্যই সংশোধন করা হবে ইনশাল্লাহ।

Previous Post
Next Post

0 comments:

Thank you sharing for your comment