বাংলাদেশের
অন্যতম একটি জেলার নাম হলো রাঙামাটি জেলা। এই জেলাটি একটি পার্বত্য জেলা। এটি বাংলাদেশের
দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। এই জেলাটি মোট আয়তন প্রায় ৬১১৬.১৩ বর্গ কি.মি। এটি বাংলাদেশের বৃহত্তম একটি
জেলা।এই জেলা্টি মোট ১০টি উপজেলা নিয়ে গঠিত।
এই জেলার উপজেলা গুলো ১. কাপ্তাই উপজেলা, ২. কাউখালী উপজেলা, ৩.নানিয়ারচর উপজেলা, ৪.
বরকল উপজেলা, ৫. বাঘাইছড়ি উপজেলা, ৬. বিলাইছড়ি উপজেলা, ৭. রাঙামাটি সদর উপজেলা, ৮.
লংগদু উপজেলা, ৯. রাজস্থলি উপজেলা ও ১০. জুরাছড়ি উপজেলা ।রাঙামাটি জেলায় মোট ১২ টি
থানা রয়েছে। আর এই থানা গুলোর নাম হলো ১. কাপ্তাই থানা, ২. কাউখালী থানা, ৩.নানিয়ারচর
থানা, ৪. বরকল থানা, ৫. বাঘাইছড়ি থানা, ৬. বিলাইছড়ি থানা, ৭. রাঙামাটি সদর থানা, ৮.
লংগদু থানা, ৯. রাজস্থলি
থানা , ১০. জুরাছড়ি থানা, ১১. সাজেক থানা ও
১২. চন্দ্রঘোনা থানা । এই জেলায় মোট ২টি পৌরসভা রয়েছে এগুলো হলো ১. বাঘাইছড়ি ও ২. রাঙামাটি।
এই জেলায় মোট ৫০টি ইউনিয়ন রয়েছে, ১৫৯টি মৌজা, ১৩৪৭টি গ্রাম রয়েছে।
রাঙামাটি জেলায়
মোট জনসংখ্যা রয়েছে ৬,২০,২১৪ জন (আদমশুমারী
২০১১)। এই জেলাটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৬০ সালের ২০ জুন। এই জেলাটির সংসদীয় আসন নং ২৯৯ পার্বত্য
রাঙামাটি। এই জেলাটির পোস্ট কোড ৪৫০০ এবং প্রশাসনিক বিভাগের কোড ২০৮৪। প্রথমে বান্দরবান,রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি এই তিনটি পার্বত্য
অঞ্চলের সমন্বয়ে চট্টগ্রাম জেলা গঠিত হয়। পরবর্তিকালে এই জেলা তিনটি বিভক্ত হয়ে একেকটি
পৃথক পৃথক জেলায় পরিনত হয়।জেলা সৃষ্টির পূর্বে এটির নাম ছিল কার্পাস মহল। চট্টগ্রাম
জেলাটি থেকে ১৯৮১ সালে বান্দরবান জেলা এবং ১৯৮৩ সালে খাগড়াছড়ি জেলাটি পৃথকভাবে সৃষ্টি
করা হলে পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলার মূল অংশ রাঙামাটি পার্বত্য জেলাটি হিসেবে আত্মপ্রকাশ
করে।
এই জেলাটিতে
অনেকগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই জেলাটিতে রয়েছে মোট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
০১টি, মেডিকেল কলেজ ০১টি (সরকারী), কলেজ রয়েছে মোট ১৬টি যার মধ্যে সরকারী রয়েছে মোট
০২টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় মোট ৫১টি যার মাঝে
সরকারী মোট ০৬টি, কারীগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মোট ০৭টি, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় মোট
২২টি এবিং মোট প্রাথমিক বিদ্যালয় ৪১১টি। এই জেলাটির স্বাক্ষরতার হার ৪৩.৬০%। কর্ণফুলি
নদীটি হলো এই জেলাটির প্রধান নদী
। এই নদীটি ভারতের লুসাই পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে রাঙামাটি জেলার উত্তর-পূর্ব
সীমান্ত দিয়ে ঠেগা নদীর মোহনা হয়ে এ অঞ্চলে
প্রবেশ করেছে। কাচালং, মাইনী, চেঙ্গি, ঠেগা, সলক ও রাইংখ্যং নদীগুলো হলো কর্ণফুলি নদীর উপনদী। এছাড়াও
এই জেলায় রয়েছে বাংলাদেশের বৃহত্তম কাপ্তাই হ্রদ।
রাঙামাটি জেলায়
কৃষি কাজের মধ্যে একমাত্র ঝুম পদ্ধতিতেই পাহাড়ে চাষাবাদ হয়
। এই জেলায় ধান, পাট, আলু,
তুলা, ভূট্টা ও সরিষা চাষ হয়।এছাড়াও এই জেলায় রয়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় কাগজের কল
কর্ণফুলি কাগজ কল। এবং দেশের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র।
এছাড়াও আছে রেয়ন কল, ঘাগড়া বস্ত্র কারখানা,
উপজাতীয় বেইন শিল্প ইত্যাদি।
রাঙামাটি জেলায়
যোগাযোগের প্রধান সড়ক চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়ক। এছাড়াও সব ধরনের যানবাহনে যোগাযোগ
করা যায়।
রাঙামাটি জেলায়
সরকারী ভাষা বাংলা ভাষা। স্থানীয় বাঙালীরা চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে । এছাড়াও
অন্যান্য ক্ষুদ্র জাতি-গোষ্ঠীর ভাষা হিসেবে রয়েছে চাকমা, মারমা, ম্রো, ত্রিপুরা, বম,
লুসাই, চাক, খেয়াং, খুমি, তঞ্চঙ্গ্যা ও পাংখুয়া ইত্যাদি।
রাঙামাটি জেলার
পার্বত্য অঞ্চলের চাকমাদের প্রধান উৎসব বিঝু
উৎসব। এছাড়া্ও প্রত্যেক ধর্মের লোকেরা আলাদা আলাদা উৎসব পালন করে থাকে।
রাঙামাটি জেলার
দর্শনীয় স্থান সমূহ : কাপ্তাই হ্রদ, কাপ্তাই বাঁদ ও কর্ণফূলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র,
রাজা জং বসাক খানের দীঘি ও মসজিদ, রাজা হরিস
চন্দ্র রায়ের আবাসস্থলের ধ্বংসাবশেষ, কর্ণফূলি
কাগজ কল, ঝুলন্ত সেতু
, রাজবন বিহার, তবলছড়ি আনন্দ বিহার, সুবলং ঝর্ণা,
সাজেক ভ্যালী,
উপজাতীয় জাদুঘর, কাপ্তাই জাদুঘর, বেতনবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র, পেদা টিং টিং, কাপ্তাই
জাতীয় উদ্যান, টুকটুক ইকো ভিলেজ, যমচুক, নৌবাহিনীর
পিকনিক স্পট, ডলুছড়ি জেতবন বিহার, ওয়াজ্ঞা চা এস্টেট, প্যানোরমা জুম রেস্তোরা, বনশ্রী
পর্যটন কমপ্লেক্স, চিৎমরম বৌদ্ধ বিহার
ও বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্সনায়েক মুন্সী আব্দুর রউফ
স্মৃকি ভাস্কর্য।
0 comments:
Thank you sharing for your comment