ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়টি বাংলাদেশের অন্যতম সেরা একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়। এটি ঢাকা শহরের ৬৬ মহাখালী, ঢাকা ১২১২, বাংলাদেশে অবস্থিত। এটি একটি অস্থায়ী ক্যাম্পাস। এই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে দেশি এবং বিদেশী ছাত্র-ছাত্রীরা উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করতে পারে। এই বিশ্ববিদ্যালয়টির আরেকটি ক্যাম্পাস ঢাকা জেলার সাভারে অবস্থিত। সাভারের এই ক্যাম্পাসটি শুধুমাত্র স্নাতকার্থীদের জন্য তৈরী করেছেন। এটি একটি আবাসকি ক্যাম্পাস। এখানে কম্পিউটার ল্যাব, আবাসিক হল, খাবারের জন্য ৪টি ভোজন শালা, শিক্ষকদের থাকার ভবন, গ্রন্থাগার, পুরুষ ও মহিলাদের থাকার জন্য পৃথক ভবন,শ্রেনীকক্ষ, সেমিনার হল, ল্যাব, চিকিৎসার ব্যবস্থা, খোলা জায়গা ও মানসিক পরামর্শ কেন্দ্র এই আবাসিক ক্যাম্পাসে রয়েছে। এটি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন মাসের বাধ্যতামূলক একটি সেমিস্টার, এটিকে টার্কও বলা হয়ে থাকে।
মহাখালী ঢাকা শহরের অন্যতম একটি
ব্যস্ত এলাকা হওয়ায় এখানে বড় ধরনের ক্যাম্পাস তৈরী করা সম্ভব নয়। এছাড়াও ২০২৩ সালে
মেরুল বাড্ডায় (রামপুরা হাতির ঝিল এলাকার পাশে) ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় তাদের আরেকটি
নতুন সুবিশাল স্থায়ী ক্যাম্পাস ভবন নির্মাণ করেছেন। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসটি
৫ একর জমির মধ্যে প্রতিষ্ঠিত। নির্মাণাধীন ভবনটি ১৭,০০,০০০ স্কয়ার ফুটের। এটি ৩টি বেজমন্টসহ
১৩ তলা বিশিষ্ট একটি বিশাল ভবন। এই নতুন ক্যাম্পাসে থাকছে ক্রিকেট খেলার মাঠ, সুইমিং
পুল, কনফারেন্স রুম, পার্কিং সুবিধাসহ আরও অনেক কিছু। এই সুবিশাল ভবনে থাকছে ৭০০ আসন বিশিষ্টি একটি অডিটোরিয়াম,
আরও থাকছে ১৮৫০টি আসন বিশিষ্ট একটি বহুমুখী হল, ৪৭৫টি গাড়ি পার্কিং সুবিধা, ল্যাব,
শ্রেণীকক্ষ,ডিজাইন স্টুডিও, লেকচার থিয়েটার, সাবস্টেশন, তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত ডাটা
সেন্টার, সিসিটিভি, ইউপিএস, সোলার প্যানেল, আগুন নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থাপনা, লিফট, এসকেলেটর
লিফট,প্রশাসনিক অফিস, শিক্ষকদের লাউঞ্জ, ক্যাফেটেরিয়া, ই- লাইব্রেরী সহ সকল ধরনের আধুনিক
সুবিধার সমন্বয়।
এই ক্যাম্পাসে প্রায় ১২০০০ থেকে
১৫০০০ ছাত্র-ছাত্রীদের থাকার সুব্যবস্থা রয়েছে।
ব্র্যাকের এই সুবিশাল আধুনিক
পরিবেশ বান্ধব ক্যাম্পাসের ডিজাইন করেছেন সিঙ্গাপুর ভিত্তিক আর্কিটেকচারাল ফার্ম
WOHA DESIGN PRIVETE LIMITED.
আপনারা বিস্তারিত জানতে ব্র্যাক
ইউনিভার্সিটির ওয়েব সাইটে ভিজিট করে দেখতে পারেন।
একদম মেইন রোডের পাশাপাশি হওয়ায়
যাতায়াত ব্যবস্থা অনেক সহজ হয়েছে। এর পাশেই আবার আরেকটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে।
সেটির নাম ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়। এটি ব্র্যাকের ঠিক অপর পাশিই অবস্থিত। এটি আফতাবনগর
এলাকার মধ্যে প্রতিষ্ঠিত।
ব্র্যাকের নতুন ক্যাম্পাসের পাশেই
রয়েছে হাতিরঝিল, রামপুরা, বনানী, বারিধারা আবাসিক এলাকা, আফতাবনগর, মহাখালী, গুলশান
নিকেতন ও বনশ্রী আবাসিক এলাকা।
এটির কার্যক্রম যদিও ২০২৩ সালের শেষের দিকে চালু হবার কথা রয়েছে। এটির প্রতিষ্ঠাতা ব্যাক সংস্থার ফজলে হাসান আবেদ। তিনি ১৯৯২ সালের বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইনের অধীনে এই প্রতিষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেন ২০০১ সালে । বর্তমানে বাংলাদেশে অসংখ্য বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। কিন্তু মান সম্মত পড়ালেখার জন্য ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় শীর্ষে অবস্থান করছেন। আমাদের দেশের সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা তেমন একটা বেশি নাই। অথচ প্রতি বছরই অসংখ্য মেধাবী স্টুডেন্ট উচ্চ শিক্ষার ভালো সুযোগ পাচ্ছে না। কারণ পর্যাপ্ত পরিমানে পাবলিক বা সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় নেই। আর বেসরকারী যে সকল বিশ্ববিদ্যালয় আছে সেখানে স্টুডেন্টদের পছন্দের ডিপার্টমেন্ট/অনুষদও নেই। আর সেখানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়-এ অনেক ভালো ভালো প্রোগ্রাম গুলো রয়েছে। এখানে পড়ালেখা করতে গেলে অবশ্য অনেক টাকার দরকার। বাংলাদেশের একমাত্র ধনী ব্যক্তিরাই তাদের সন্তানদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর সুযোগ পেয়ে থাকেন। আর তাছাড়াও রেজাল্টের উপর ভিত্তি করেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে স্টুডেন্ট ভর্তি করায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ব্র্যাকের ২০২৩ সালের এবং বর্তমান
(৫ম তম) উপচার্য ডক্টর ফাহিম উল হক। এর আগে ২০১৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত উপচার্য এর
দায়িত্ব পালন করেছেন ভিনসেন্ট চ্যাং।
ব্র্যাক শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ই
প্রতিষ্ঠা করেন নি। বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় এরা বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান তৈরী
করেছেন।
ব্যাকের স্কুল রয়েছে ৩টি, এগুলো
হলো-
১. ব্র্যাক বিজনেজ স্কুল,
২. ব্র্যাক জেমস পি গ্যান্ট স্কুল
অব পাবলিক হেলথ ও
৩. ব্র্যাক ‘ল’ স্কুল।
ব্র্যাকের বিভিন্ন ইনস্টিটিউটও
রয়েছে। এগুলো হলো-
১.ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স
এন্ড ডেভেলপমেন্ট,
২. ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন
ডেভেলপমেন্ট,
৩. ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব ল্যাংগুয়েজ
(বি. আই. এল) ও
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগ
বা অনুষদঃ
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে নিচের
বিভাগ বা অনুষদ গুলো বর্তমানে চালু রয়েছে;
১.অর্থনীতি ও সামাজিক বিজ্ঞান
অনুষদ,
২. স্থাপত্য অনুষদ,
৩. ইংরেজী অনুষদ,
৪. নৃবিজ্ঞান অনুষদ,
৫. ফার্মেসি অনুষদ,
৬. বৈদ্যুতিন ও যোগাযোগ প্রকৌশল
অনুষদ,
৭. গনিত ও প্রাকৃতিক বিজ্ঞান
অনুষদ,
৮. কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল
অনুষদ ও
৯. তড়িৎ ও বৈদ্যুতিন প্রকৌশল
অনুষদ।
আসুন আমরা এখন জেনে নিই ব্র্যাক
বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক প্রোগ্রামের জন্য কোন বিষয়ে কত পয়েন্ট দরকার পড়ে।
এসএসসি/এইচএসসি/সমমান (অতিরিক্ত
বিষয় সহ) ৩.৫ পয়েন্ট লাগে আলাদা আলাদা ভাবে।
আরও বিস্তারিত জানতে ব্র্যাকের
ওয়েব সাইট থেকে দেখে নিতে পারেন। কারণ এই পয়েন্ট চলমান প্রক্রিয়া। স্টুডেন্ট বেশি হলে
হয়তোবা পরের বছর এটি পরিবর্তন হতে পারে।
দর্শক আমাদের পোস্টে অনেক তথ্য ভুল বা কম থাকতে পারে। আপনার সঠিক তথ্য এবং চলমান সকল কার্যক্রম জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইট ভিজিট করুন
https://www.bracu.ac.bd
আর আপনাদের কোনো মন্তব্য থাকলে অবশ্যই কমেন্টস করে জানাবেন।
আরও পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করুন-
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস,
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস,
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস,
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়,
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়,
0 comments:
Thank you sharing for your comment