Saturday, November 4, 2023

ল্যাপটপ কেনার সময় যে চারটি বিষয় অবশ্যই আপনার মাথায় রাখতে হবে

 

ল্যাপটপ কেনার সময় যে চারটি বিষয় অবশ্যই আপনার মাথায় রাখতে হবে
ল্যাপটপ

 

ল্যাপটপ কেনার সময় যে চারটি বিষয় অবশ্যই আপনার মাথায় রাখতে হবে

আসুন আমরা আজকে জেনে নিই নতুন ল্যাপটপ বা কম্পিউটার কেনার সময় আমাদের কে যে যে বিষয়গুলো অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। এগুলো না দেখে বা না জেনে কিনলে আপনি জেতার চাইতে ঠকেই যাবেন বেশি।

আশা করি আজকের আলোচনার পর থেকে আপনি আর কখনই ঠকবেন না।

১.র্য্যাম RAM (Random Access Memory) - প্রতিটি ৮জিবি এবং ১৬ জিবি র্য্যামের মান কখনই এক না। ২৬৬৬ (2666Mhz) মেগা হার্জ এবং ৩২০০ (3200Mhz) মেগা হার্জ কখনই সেইম স্পীড প্রদান করবে না। অবশ্যই ৩২০০ মেগা হার্জ বেশি স্পীড দিয়ে থাকে ২৬৬৬ মেগা হার্জ থেকে


ল্যাপটপ কেনার সময় যে চারটি বিষয় অবশ্যই আপনার মাথায় রাখতে হবে
র্য্যাম

 তাই আপনি অবশ্যই ৩২০০ মেগা হার্জ দেখে কিনবেন। র্য্যাম প্রধানত দুই ধরনের- স্ট্যাটিক র্য্যাম ও ডাইনামিক র্য্যাম। এগুলো থেকে আবার কয়েক ভাগে ভাগ করা হয়েছে  যেমন- ডিডিআর১ (DDR1), ডিডিআর২ (DDR2), ডিডিআর৩ DDR3), ডিডিআর৪ (DDR4) ও ডিডিআর৫ (DDR5-4800Mhz) এখানে DDR বলতে Double Data Rate কে বুঝায়। ।  এগুলো মাদারবোর্ডের উপর নির্ভর করে। যে মাদারবোর্ড যে ধরনের র্য্যাম সাপোর্ট করবে আপনাকে সেই মডেল অনুযায়ী র্য্যাম কিনতে হবে। র্য্যাম অনেক কোম্পানী তৈরী করে থাকেন। 

যেমন; স্যামসাং, এঢাটা,কোরশিওর আরও অনেক কোম্পানী। মনে রাখবেন ল্যাপটপ আর ডেস্কটপের র্য্যাম কিন্ত একই নয়। ল্যাপটপের তুলনায় ডেস্কটপের র্য্যাম বড় হয়ে থাকে। র্য্যামের সাইজও আবার ভিন্ন ভিন্ন; যেমন ৫১২এমবি, ১জিবি, ২জিবি, ৪জিবি, ৮জিবি, ১৬জিবি, ৩২জিবি ইত্যাদি। আপনি যতবেশী সাইজের র্য্যাম আপনার ল্যাপটপ বা ডেস্কটপে লাগাবেন তত বেশি ভালো পারফরম্যান্স পাবেন। তবে অবশ্যই আপনার মাদারবোর্ডে সাপোর্টেড হতে হবে।



২. GPU- Graphics Processing Unit মানে গ্রাফিক্স কার্ড। এখানে প্রতিটা  আরটিএক্স (RTX) এখানে GeForce RTX 3050 এবং GeForce RTX 3060 কিন্তু এক না। প্রতিটি জিপিইউ এর ক্ষমতা আলাদা আলাদা থাকে। যেমন 40w, 75w ও 95w।  সো আপনারা বুঝতেই পারছেন 40w থেকে 95w বেশী পাওয়ারফুল।

 আমরা যখন গেমিং করি বা ভিডিও এডিটিং করতে যাই তখন আসলে আমাদের গ্রাফিক্স কার্ডের প্রয়োজন পড়ে। ভিডিও রেন্ডারিং করতে গেলে প্রচুর সময় লাগে লাগে। যদি আমাদের পিসিতে ভালো মানের একটি গ্রাফিক্স কার্ড লাগানো থাকে তাহলে আমরা আমাদের কাজগুলো অনেক দ্রুত সম্পন্ন করতে পারব।



৩. প্রতিটা প্রসেসরও (Processor) এক না। প্রসেসর কে বলা হয় একটি কম্পিউটারের হৃদপিন্ড। কম্পিউটারের সকল কার্যক্রম এখান থেকেই সম্পন্ন হয়।  র্প্রতিটা প্রসেসরের নামের পেছনে একটা করে লেটার বা বর্ণ থাকে যেমন; কোর আই৫ ১২৫০০এইচ (Core i5 12500H) , আই৫ ১২৫০০পি (Core i5 12500P), আই৫ ১২৫০০জি (Core i5 12500G) ও আই৫ ১২৫০০ইউ (Core i5 12500U)


ল্যাপটপ কেনার সময় যে চারটি বিষয় অবশ্যই আপনার মাথায় রাখতে হবে

ইন্টেল প্রসেসর

 ইউ এবং পি সিরিজের  প্রসেসর সাধারণত হালকা পাতলা কাজের জন্য। প্রসেসরের নামের পিছনে ইউ থাকলে সেইটা ব্যাটারী ব্যাকআপ ভালো  দিবে আর পি থাকলে পারফরম্যান্স ভালো দিবে। এইচ এবং জি সিরিজ দুটোই ভারী কাজের জন্য তৈরী করা হয়েছে।

 তবে পার্থক্য শুধু জি সিরিজের গ্রাফিক্সটা ভালো থাকে। স্পেশালী অপটিমাইজ থাকে গেমিং এর জন্য। ব্যাটারী ব্যাকআপও ভালো পাওয়া যায় এবং আর ভিডিও এডিটিং ও করা যায় জি সিরিজের প্রসেসরে। দামও অনান্য গুলোর তুলনায় অনেক। প্রসেসর ল্যাপটপ আর ডেস্কটপের জন্য আলাদা আলাদা।

 আবার মাদারবোর্ডের মডেল অনুযায়ী মাদারবোর্ড এ প্রসেসর বসানোর জায়গায় পিন সংখ্যা থাকে। তাই প্রসেসর এবং মাদারবোর্ডের পিন সংখ্যা একই  বা মিল রেখে কিনতে হবে। উদাহরণ- LGA-1156। আরেকটা বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে প্রসেসর ইন্টেল নাকি এএমডি? সেই অনুযায়ী মাদারবোর্ড কিনতে হবে। ইন্টেলের প্রসেসরের মাদারবোর্ডের ডিজাইন এক আর এএমডির প্রসেসরের জন্য মাদারবোর্ড ডিজাইন আরেক।


৪. এসএসডি (SSD- Solid State Drive) র্য্যাম (RAM) এবং জিপিইউ(GPU- Graphics Processing Unit ) এর মতই এসএসডির (SSD) ও আলাদা আলাদা স্পীড ও জেনারেশন রয়েছে। যতবেশি লেটেস্ট জেনারেশন তত বেশি ভালো। উদাহরণ- জেন-১,২,৩,৪ (Gen-1,2,3,4) এই রকম থাকে।


ল্যাপটপ কেনার সময় যে চারটি বিষয় অবশ্যই আপনার মাথায় রাখতে হবে

এসএসডি

 আপনি দেখে কিনবেন। দোকানদার আপনাকে খারাপটা ধরিয়ে দিতে পারে। তাই অবশ্যই আপনাকে এগুলো মাথায় রাখতে হবে এবং অবশ্যই জানতে হবে। এসএসডি বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে; যেমন, ২.৫ (2.5 inch) ইঞ্চ সাটা (SATA Port) পোর্ট এবং এম.২ (M.2 Port) পোর্ট । আপনার মাদারোবোর্ডে যদি এম.২ (M.2) এর পোর্ট না থাকে তবে সাটা (SATA) পোর্টের এসএসপি কিনতে হবে।

 একটা ভালো মানের এসএসডির RPM 7200 থাকে এবং এর চাইতে কমও থাকে। এসএসডির স্পীড দেখতে হয় এর গায়ের আরপিএম (RPM- Revolutions Per Minutes) লেখা দেখে। যদি আরপিএম বেশি থাকে তবে অবশ্যই সেটার স্পীড অনেক ভালো। এসএসডি বিভিন্ন সাইজের হয়ে থাকে। সাধাররণত ১২০ জিবি, ২৪০ জিবি, ২৫০ জিবি,২৫৬ জিবি, ৪৮০ জিবি, ৫০০ জিবি, ৫১২ জিবি, ১টেরা বাইট এবং আরও অনেক বেশি। এগুলোর দামও হার্ডডিস্কের তুলনায় অনেক।

 এসএসডি আপনার ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের ডাটার রিড রাইট স্পীড বাড়িয়ে দেয় । যার কারণে আপনার কম্পিউটারকে আপনি কমান্ড দিতে যতক্ষণ ফিডব্যাক দিতে দেরী হয় না্ অথ্যাৎ এটির রেসপন্স টাইম অনেক কম। স্পীড ভালো পেতে অবশ্যই আপনাকে ভালো ব্যান্ডের এসএসডি কিনতে হবে। বাজারে বিভিন্ন কোম্পানীর এসএসডি পাওয়া যায়। 

এর মধ্যে ভালো মানের এসএসডি হচ্ছে স্যামসাং- Samsung, ট্রান্সসেন্ড- Transcend, সিগেট- Seagate, ইন্টেল- Intel, সাবরেন্ট- Sabrent, এসকে হাইনিক্স- SK Hynix, ক্রুসিয়াল- Crucial, কোরসাইয়ার- Corsair, ইনল্যান্ড- Inland (Micro Center) ইত্যাদি। এছাড়াও নরমাল যেগুলা পাবেন তার মধ্যে আছে ডব্লিউ ডি গ্রীন/ব্লু- WD-Westurn Digital Green/Blue, রামাস্তা- Ramasta, পিএনওয়াই-PNY,পিক্সেল-Pixel, Tosiba, TwinMOS, ADATA, Apacer, ASUS,ATP Electronics, Dahua, Biostar, Dell, Fusion, Gigabyte, Hikvision, KingSton, Lenovo, Lexar, Netac, Patriot Memory, PioData ও  Sandisk ইত্যাদি। এই সকল ব্যান্ডের এসএসডি গুলো বাংলাদেশে বেশি চলে। তাই এগুলো আপনার কিনলে গ্যারান্টি পাবেন। তিন থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত গ্যারান্টি প্রদান করে কোম্পানী গুলো।

এছাড়াও আরও অনেক ব্যান্ডের এসএসডি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো হলো-

Dataram, Edge tech Corporation, G-Skill, GSnano Tech, Greenliant system, Hewlett Packard, HyperOs System, Imation, Kaminario, Kioxia, Leven, Lite On, LSI Corporation,Memoright, Mushkin,,Netlist,Nimbus Data, OCZ, Optiarc, OWC, , , Ritek, ,Silicon Power, Sk hynix, STEC, Suoer Talent Technology, Strontium, Swissbit, TDK, Texas Memory System, Verbatim, Violin Memory, Virtium Memory, Wilk Electronik, Zalamon and ZOTAC Etc.

আপনারা আপনাদের পছন্দের ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কেনার আগে অবশ্যই এই সমস্ত বিষয়গুলো ভালো মতো জেনে বুঝে নিবেন। আর নিজে না বুঝলে একজন এক্সপার্টকে সাথে নিয়ে আপনার পিসি তৈরী করুন।

 

আমাদের অনান্য পোস্টগুলো পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করুন-

পাওয়া সাপ্লাই কি এবং কিভাবে চেক করবেন পাওয়ার সাপ্লাইটি ভালো নাকি নষ্ট।

কিভাবে উইন্ডোজ ১০ এবং ১১ এর অটোমেটিক আপডেট বন্ধ করতে হয়।

কম্পিউটারের সবচেয়ে শক্তিশালী ক্ষতিকর ভাইরাস গুলোর নাম।

ফায়ারওয়াল কি? কেন এবং এটি কি কাজে ব্যবহৃত হয়?

 

 

Previous Post
Next Post

2 comments:

Thank you sharing for your comment