Thursday, December 14, 2023

এসএসডি-SSD ও এইচডিডি-HDD এর মধ্যে পার্থক্য

এসএসডি-SSD ও এইচডিডি-HDD এর মধ্যে পার্থক্য

এসএসডি ও এইচডিডি এর মধ্যে পার্থক্য
Picture - SSD

কেন আপনি  এসএসডি কিনবেন?
আপনার পিসি বা ল্যাপটপকে আজই ফাস্ট করে ফেলুন।
মাত্র ৮-১৩ সেকেন্ডে আপনার ল্যাপটপ বা পিসি অপেন হবে যে কাজটি করলে।
আপনি কোন কোম্পানির এসএসডি কিনবেন?

আজকের পোস্টে আপনার এইসব প্রশ্নের উত্তর নিয়ে চলে এসেছি। তো জানতে নিচের সম্পূর্ণ

লেখাটি পড়ুন।


টেকনোলজী দিন দিন মানুষের হাতের মুঠোয় চলে আসতে শুরু করেছে। আর দিন যত সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে ঠিক টেকনোলজীগুলোও কিন্তু ক্রমশ বড় থেকে আকারে  ছোট হয়ে চলেছে। তবে এর গতি বা স্পীড কিন্তু কখনই কমে যাচ্ছে না। 

বরং আগের চাইতে কয়েক গুন দ্রুত গতি সম্পন্ন হয়ে বাজারে বা মানুষের হাতে আসছে। যেমনি আমরা দেখতে পাই হার্ডডিস্ক বা এইচডিডি(HDD)। এটির সাথে আমরা অনেক আগে থেকেই পরিচিত।কারণ আমাদের পিসি বা ল্যাপটপের ডাটাগুলো স্টোরেজ করতে বা ডাটাকে সংরক্ষিত রাখতে এটির ব্যবহার করে আসছি।

 কিন্তু আমরা এটি ব্যবহার করে তেমন দ্রুত  গতির সাথে আমাদের কাজগুলো করতে পারছি না। কারণ এটির গতি অনেক কম বা ধীরগতির। আমরা যখন আমাদের পিসিতে কোনো কাজ করার জন্য আমাদের কম্পিউটারের মধ্যে ব্যবহৃত এইচডিডিতে (HDD) থাকা তথ্য বা ডাটাকে এক্সেস করতে যাই ঠিক, তখনই আমরা বুঝতে পারি আমাদের হার্ডডিস্কের গতির বিষয়টা। আমরা আমাদের কমান্ড দেবার ঠিক কত টাইম পর সেটি আমাদের ওয়ার্ক প্যানেল বা মনিটরে দেখতে পাই সেটিকে রেসপন্স টাইম বলে।

আর রেসপন্স টাইম যত দ্রুত হবে, আমাদের কাজটিও তত দ্রুততার সাথে করতে পারব।

আর তাছাড়া আমরা আমাদের পিসিতে যে অপারিটিং সিস্টেমটি ( উইন্ডোজ টি যেমন ৭, ৮.১, ১০ বা ১১) ব্যবহার করে থাকি সেটি অপেন হতে বা বুট হতে অনেক বেশি সময় ব্যয় করে। মূলত রেসপন্স টাইমের উপর ভিত্তি করেই বাজারে হার্ডডিস্কের বিকল্প হিসেবে প্রায় ৮০ গুন বেশি দ্রুত গতির একটি স্টোরেজ ডিভাইস এসেছে। সেটির নাম হলো সলিড স্টেট ডিভাইস বা এসএসডি(SSD)। এটির রেসপন্স টাইম খুবই কম। আপনি কল্পনাই করতে পারবেন না এত দ্রুত কিভাবে এটি কাজ করে।

চলুন আজকে আমরা সেটিরই কিছু তথ্য আপনাদেরকে দিই। 

HDD (Hard Disk Drive) / হার্ডডিস্ক ড্রাইভ।

প্রথমে আমরা হার্ডডিস্ক সম্পর্কে জেনে নিই।

১). হার্ডডিস্ক তৈরী করে আইবিএম কোম্পানী ১৯৫৬ সালে।

২). হার্ডডিস্কের মধ্যে কিছু স্পিনিং প্লেট থাকে। যা মূলত একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে ঘুরতে থাকে। যার ফলে সেখান থেকে ডাটা বা তথ্যগুলো আমাদের কম্পিউটারে রিড ও রাইট হয়ে থাকে।

৩). এতে ম্যাগনিটিজম ব্যবহার করা হয় স্পিনিং প্লেটে ডাটা স্টোর করার জন্য।

৪). স্পিনিং প্লেটের উপর একটা ডাটা রিড রাইট হেড থাকে। এই হেড দ্বারা ডাটাকে রিড করে প্রসেসিং এর মাধ্যমে মনিটরে দেখানো হয়। এবং অনান্য অপারেশন সম্পন্ন করা হয়।

৫). হার্ডডিস্কে থাকা প্লেটটি যত দ্রুত ঘুরবে তত দ্রুত গতিতে ডাটা রিড ও রাইট হবে। আর এই ঘোড়ার গতিতে বলা হয় রিড রাইট স্পিড বা রেসপন্স টাইম।

৬). এটিতে কিছু মুভিং পার্টস থাকায় ড্যামেজ বা নষ্ট হবার পরিমান বেশি থাকে। 

৭). এটিতে মুভিং পার্টস থাকায় এটি অনেক গরম হয়

৮). বিদ্যুৎ খরচ বেশি করে এটি।

৯). মুভিং পার্টস থাকার ফলে কিছুটা শব্দও হয়ে থাকে

১০). এইচডিডি থাকা একটি পিসি বা ল্যাপটপ অপেন হতে মিনিমাম সময় লাগে ৩০ সেকেন্ড - ১ মিনিট বা তারও বেশি সময়।

১১). এইচডিডিতে থাকা ডাটা কপি বা কাট করতে বেশি সময় লাগে। সাধারণত এটিতে ৫০ এমবিপিএস বা ১২০ এমবিপিএস স্পীড থাকে।

১২. এটির ওজন তুলনামূলক অনেক বেশি।

১৩. দাম এসএসডির তুলনায় অনেক কম।

১৪. ফাইল ডিলেট হয়ে গেলে সহজে উদ্ধার করা যায়। অনেক সহজ সাধ্য ব্যাপার এবং ব্যয় কম। যদিও এটি ডিপেন্ড করে আপনার এইচডিডির ফিজিক্যাল কন্ডিশনের উপর।

১৫. আকার বড়।

প্রথম দিকে যখন বিকল্প কিছু ছিল না তখন এগুলোই আমাদের কাছে অনেক দ্রুত গতির মনে হত। বর্তমানে বিকল্প থাকার কারণে আমরা হার্ডডিস্কের ব্যবহার অনেকটা কমিয়ে দিয়েছি।


এখন আমরা এসএসডি সম্পর্কে জানব।

SSD (Solid State Drive) / সলিড স্ট্রেইট ড্রাইভ।

এসএসডি মানে সলিড স্টেট ড্রাইভ। সাধারণত পেনড্রাইভ বা মেমোরিতে যে ধরনের মেকানিজম ব্যবহার করা হয়। এসএসডিতেও সেইম মেকানিজম ব্যবহার করে তৈরী করা হয়।

১. এটাতে কিছু ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট ব্যবহার করে ডাটা স্টোর বা জমা করা হয়।

২. ফিজিক্যাল মুভিং কোনো পার্টস নেই বলে সহজে নষ্ট বা ড্যামেজ হবার সম্ভাবনা অনেক কম।

৩. ফিজিক্যাল মুভিং পার্টস না থাকায় শব্দও হয় না।

৪. ফিজিক্যাল মুভিং পার্টস না থাকায় এটি গরমও অনেক কম হয়।

৫. ফিজিক্যাল মুভিং পার্টস না থাকায় বিদ্যুৎ খরচও অনেক কম হয়

৬. ডাটার রিড রাইট স্পিড এইচডিডির এর তুলনায় কমপক্ষে ৮০ গুন বেশি।

৭. এসএসডি থাকা পিসি বা ল্যাপটপের অপেনিং প্রক্রিয়া বা বুট প্রক্রিয়া অনেক দ্রুত। ৮ - ১৩ সেকেন্ড সময় লাগে সর্বোচ্চ।

৮. এটির ওজন অনেক কম।

৯. দাম এইচডিডির তুলনায় অনেক বেশী। প্রায় ৮-১০ গুন বেশি দাম

১০. ফাইল ডিলেট হয়ে গেলে সহজে উদ্ধার করা যায় না। অনেক কষ্ট সাধ্য ব্যাপার এবং ব্যয়বহুল। যদিও এটি ডিপেন্ড করে আপনার এসএসডির ফিজিক্যাল কন্ডিশনের উপর

১১. আকারে অনেক ছোট।

১২. এতে হার্ডডিস্কের মত ঘূর্ণায়মান কোনো ডিস্ক নেই। এতে ব্যবহার করা হয়েছে কিছু ইলেকট্রিক চিপের। এগুলোর মাধ্যমে ডাটা রিড রাইট হয়।

আপনারা আপনাদের পিসিকে দ্রুত গতির বানাতে চাইলে এসএসডি ব্যবহার করুন। যতি বাজেটের সমস্যা হয় তবে ১২০ জিবি বা ২৫০ জিবির একটি ভালো ব্যান্ডের এসএসডি কিনে সেটিতে শুধুমাত্র অপারেটিং সিস্টেমটি ইনস্টল করুন।

এতে আপনার পিসির গতি আগের তুলনায় বহুগুন বৃদ্ধি পাবে। সকল কাজ দ্রুত করতে পারবেন। কোনো ধরনের হ্যাংক করা ছাড়াই। আর তাছাড়া সামনের দিন গুলোতে আপনারা হার্ডডিস্ক আর পাবেন না। কারণ সেগুলো বাজারে আসা বন্ধ হয়ে যাবে। রাজত্ব থাকবে একমাত্র এসএসডির। কাজেই দ্রুত মুভ করুন এসএসডিতে।

কয়েকটি এসএসডি ব্যান্ডের নাম হলো -

১. সিগেট ব্রারাকুডা-Seagate,

২. স্যামসাং-Samsung,

৩. ট্রান্সসেন্ড-Transcend,

৪. এডাটা-Adata,

৫. এইচপি-HP,

৬. রামাস্তা-Ramasta,

৮. পিএনওয়াই-PNY,

৯. টিম-Team 

১০. স্যানডিস্ক-Sandisk

ভালোমানের এসএসডি ও বিস্তারিত জানতে লিংকে ক্লিক করুন।

উইন্ডোজ ১০ ও ১১ এর অটোমেটিক আপডেট বন্ধ কিভাবে করে জানতে এখানে ক্লিক করুন।