Sunday, October 15, 2023

যশোর জেলা

শোর জেলার পরিচিতি,

যশোর জেলা


আমাদের আজকের আলোচনা বাংলাদেশের অন্যতম সীমান্তবর্তী জেলা যশোর জেলাকে নিয়ে। যশোর বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি সীমান্তবর্তী জেলা। এই জেলাটি খুলনা বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। প্রশাসনিক কাঠামোর দিক দিয়ে যশোর বাংলাদেশের ১৩ তম জেলা। এই জেলাটি উপজেলার ক্যাটাগরি অনুযায়ী “এ” শ্রেণীর একটি জেলা।রাজধানী ঢাকা থেকে এই জেলার দুরত্ব প্রায় ২৭০ কি. মি. । যশোর জেলাটি ভৈরব নদের তীরে অবস্থিত। এই জেলাকে ফুলের রাজধানীও বলা হয়।

জেলার নামকরণঃ

এই জেলার নামকরণ নিয়ে অনেক ধরনের মতানৈক্য আছে। তবে অনেকেই মনে করে থাকেন আরবি নাম জসর হতে এই জেলার নামের উৎপত্তি। আরবিতে এই জসর নামের আবিধানিক অর্থ সাঁকো। অতীতে একসময় এই জেলায় প্রচুর পরিমাণে নদ-নদী দিয়ে ভরপুর ছিল। যার কারণে প্রায় জায়গাতেই চলাচলের সুবিধার্থে এলাকার মানুষজনরা বাঁশের সাঁকো তৈরী করত। তখনকার সময়ে বাংলায় পীর খান জাহান আলী ইসলাম প্রচারের জন্য যশোর অঞ্চলে আসেন। আর তখন তিনি ভৈরব নদী পার হবার জন্য বাঁশের একটি সাঁকো নির্মাণ করে নদী পাড়ি দেন। তখন আরবি শব্দ জসর থেকেই যশোর নামের উৎপত্তি। তবে অনেকের ধারণা যশোর নামটি নাকি তারও আগে থেকেই ছিল।লোকমুখে জানা যায় মহারাজ প্রতাপাদ্যিতের পিতা বিক্রমাদিত্য ও তার এক সহযোগী বসন্ত রায় গৌরের এক চরম অরাজকতার সময় সুলতানের অপরিমিত ধনরত্ন নৌকা বোঝাই করে গোপনে এই এলাকায় প্রেরণ করেন।গৌরের ধনরত্ন বোঝাই অসংখ্য নৌকা এই এলাকায় পৌঁছানোর পর ধীরে ধীরে বন জঙ্গল দিয়ে আবৃত্ত এই এলাকাটির খ্যাতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। আর তখন এই অঞ্চলে একটি সমৃদ্ধ রাজ্য গড়ে উঠল।নব প্রতিষ্ঠিত রাজ্যের নাম করণ করা হলো যশোহর। আর তখন থেকেই এই এলাকাটির নাম হয় যশোহর যা বর্তমানে যশোর নামে পরিচিত। যশোর শব্দটি যশোহর নামের অপভ্রংশ।

যশোর জেলা


যশোর একটি প্রচীন জনপদ । মনে করা হয় ১৪৫০ খ্রিষ্টাব্দের এই এলাকায় ধর্ম প্রচার করার জন্য খান জাহান আলীসহ ১২ জন আউলিয়া যশোরের মুড়লীতে ইসলাম ধর্ম প্রচার করার জন্য প্রধান কেন্দ্র হিসেবে এই জায়গাটিকে গড়ে তুলে। পরে এই স্থানে মুড়লী কসবা নামে একটি নতুন শহর গড়ে উঠে। আনুমানিক ১৫৫৫ খ্রিষ্টাব্দের দিকে যশোর নামে একটি রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৭৪৭ সালের দিকে নাটোরে রানী ভবানীর রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৭৮১ খ্রিষ্টাব্দে যশোর একটি পৃথক জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ১৮৬৪ সালে প্রথম যশোর পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়, বাংলাদেশের মধ্যে যে জেলাটি প্রথম স্বাধীন হয় সেই জেলাটি যশোর জেলা।

যশোর জেলার আয়তন, জনসংখ্যা ও ভোটার সংখ্যাঃ

যশোর জেলার মোট আয়তন ২,৬০৬.৯৪ বর্গ কি. মি. বা ১০০৬.৫৫ বর্গ মাইল।

যশোর জেলার মোট জনসংখ্যা - ৩,০৭২,১০৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ রয়েছে মোট ১,৫২২,৭৬৩ জন এবং নারী রয়েছে মোট ১,৫৪৯,১৪৬ জন। এছাড়াও তৃতীয় লিঙ্গ রয়েছে মোট ১৯৫ জন।

জেলার আয়তন অনুসারে প্রতি বর্গ কি.মি. তে বসবাস করেন- ১,১৭৮.৪৩২ জন।

এই জেলার মোট ভোটার সংখ্যা ২৩,৪০,২২৮ জন। ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জরিপ অনুযায়ী।

যশোর জেলা


যশোর জেলার অবস্থানঃ 

এই জেলাটির অবস্থান বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা। এই জেলাটির উত্তরে মাগুরা ও ঝিনাইদহ জেলা, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিম বঙ্গ, দক্ষিণে সাতক্ষীরা ও খুলনা জেলা এবং পূর্বে খুলনা ও নড়াইল জেলা অবস্থিত।

যশোর জেলার প্রশাসনিক এলাকাসমূহ;

এই জেলাটি মোট ৮টি উপজেলা ৯টি থানা রয়েছে, তারমধ্যে একটি বন্দর থানাও রয়েছে।

উপজেলাগুলো হলো;

১. যশোর সদর উপজেলা,

২. অভয়নগর উপজেলা,

৩. কেশবপুর উপজেলা,

৪. চৌগাছা উপজেলা,

৫. শার্শা উপজেলা,

৬. বাঘারপাড়া উপজেলা,

৭. ঝিকরগাছা উপজেলা ও

৮. মনিরামপুর উপজেলা এবং

৯. বেনাপোল বন্দর থানা।

যশোর জেলা


এই জেলার যোগাযাগ ব্যবস্থা-

যশোর বাংলাদেশের অন্যতম বন্দর এলাকা। এই এলাকার বন্দরের নাম যশোর বেনাপোল বন্দর। এটি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী একটি আন্তর্জাতিক পোর্ট। বাংলাদেশ হতে যে সকল পন্য ভারতে রপ্তানী করা হয় তা এই বন্দর দিয়েই যায়। আর ভারত হতে সড়ক পথে যে সকল পন্য বাংলাদেশের জন্য আমদানী করা হয় তাও এই বন্দরের মাধ্যমেই হয়ে থাকে। আর তাছাড়াও এই জেলার শক্তিশালী যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার জন্য রয়েছে রয়েছে আন্তর্জাতিক মহাসড়ক। এই মহা সড়ক পশ্চিম ও পূর্ব বাংলার মধ্যে যোগাযোগের এক বিশাল যুগান্তকারী সড়ক।

যশোর বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলীয় ব্রডগেজ-ভিত্তিক নেটওয়ার্কের একটি অংশ। এটি ২০০৮ সাল হতে চালু রয়েছে। এই নেটওয়ার্কটি ভারত পর্যন্ত প্রসারিত।

এছাড়াও এই জেলায় বিমান বাহিনীর ঘাঁটি রয়েছে, রয়েছে বিমানবন্দর।এই বিমানঘাঁটিতে দেশের সকল বৈমানিকদের বিমান উড্ডয়নের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এই বিমান বন্দরের রানওয়ে দিয়ে সাময়িক এবং অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচলের সুযোগ রয়েছে। এই বন্দর হতে অভ্যন্তরীণ যে বিমান গুলো চলাচল করে সেগুলোর নাম ইউএসবাংলা, রিজেন্ট, নভোএয়ার এবং বিমান বাংলাদেশ

এই বিমানের ফ্লাইট শুধুমাত্র দেশের ভিতরে ভ্রমণের জন্য।

এছাড়াও এই জেলায় সড়ক পথে বাস চলাচল করে ঢাকা হতে যশোর বেনাপোল বন্দর পর্যন্ত।

পদ্মা সেতুর মধ্য দিয়ে অথবা পাটুরিয়া ফেরীঘাট ব্যবহার করে সারা বাংলাদেশের সড়ক পথে চলাচল করা যায়।

 

যশোর জেলা

যশোর জেলার শিক্ষা ব্যবস্থা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম সমূহ-

বাংলাদেশে মোট ১০ শিক্ষা বোর্ড রয়েছে, তারমধ্যে যশোর শিক্ষা বোর্ড অন্যতম। এই শিক্ষা বোর্ডটি ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে এখন পর্যন্ত চলমান।

শেখ হাসিনা সফটয়্যার টেকনোলজি পার্ক দক্ষিণ বঙ্গের সর্ব বৃহৎ আইটি প্রতিষ্ঠান। এই আইটি পার্কটি কিন্তু যশোর জেলাতেই অবস্থিত।

এই জেলায় বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, পলিটেকনিক, ক্যান্টনমেন্ট স্কুল এন্ড কলেজ, বিমান বাহিনীর কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কলেজ সহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই জেলার স্বাক্ষরতার হার মোট ৯৫%।

এই জেলার সুনামধন্য শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের তালিকা সমূহ নিচে তুলে ধরা হলো-

১. যশোর বিজ্ঞান ‍ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়,

২. যশোর মেডিকেল কলেজ,

৩. যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ,

৪. বিএফ শাহিন কলেজ,

৫. যশোর সরকারী সিটি কলেজ,

৬.পাকশিয়া আইডিয়াল কলেজ,

৭. উপশহর ডিগ্রি কলেজ, যশোর,

৮. উপশহর মহিলা ডিগ্রী কলেজ যশোর,

৯. সরকারী বীরশ্রেষ্ঠ নুর মোহাম্মদ ডিগ্রী কলেজ, শাড়াতলা,

১০. যশোর সরকারী মহিলা কলেজ,

১১. গঙ্গানন্দপুর ডিগ্রী কলেজ,

১২. সরকারী এম. এম. কলেজ,

১৩. ডাঃ আব্দুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজ, যশোর,

১৪. সরকারী বীরশ্রেষ্ঠ নুর মোহাম্মদ ডিগ্রী কলেজ, শার্শা,

১৫. যশোর শিক্ষাবোর্ড মডেল স্কুল এন্ড কলেজ,

১৬. হামিদপুর আল- হেরা কলেজ, যশোর,

১৭. কেশবপুর সরকারী কলেজ,

১৮. আমদাবাদ কলেজ,

১৯.মশিয়াহাটী ডিগ্রী কলেজ,

২০. কেশবপুর সরকারী পাইলট স্কুল এন্ড কলেজ,

২১. নেহালপুর স্কুল এন্ড কলেজ,

২২. নওয়াপাড়া ডিগ্রী কলেজ,

২৩. মনিরামপুর মহিলী ডিগ্রী কলেজ,

২৪. মনিরামপুর কলেজ,

২৫. রায়পুর স্কুল এন্ড কলেজ, বাঘারপাড়া,

২৬. চৌগাছা সরকারী কলেজ,

২৭. চৌগাছা মৃধাপাড়া মহিলা কলেজ,

২৮. এসএম হাবিব কলেজ,

২৯. এবিসিডি কলেজ,

৩০. যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট,

৩১. যশোর আমিনিয়া কামিল মাদ্রাসা,

৩২. সাগরদাঁড়ী আবু সরাফ সাদেক সরকারী টেকনিক্যাল স্কুল,

৩৩. আকিজ কলেজিয়েট স্কুল,

৩৪. মনিরামপুর সরকারী বালিকা বিদ্যালয়,

৩৫. মশিয়াহাটী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়,

৩৬. নওয়াপাড়া শংকর পাশা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়,

৩৭. কাশিমনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়,

৩৮. সাগড়দাঁড়ী মাইকেল মধুসূদন ইনস্টিটিউটন,

৩৯. নওয়াপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়,

৪০. কুয়াদা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়,

৪১. মনিরামপুর কারিগরি ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট,

৪২. চাড়াভিটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়,

৪৩.চৌগাছা কামিল মাদ্রাসা,

৪৪. বাঘারপাড়া পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, বাঘারপাড়া,

৪৫. বুরুজ বাগান এম এল হাই স্কুল, শার্শা,

৪৬. ভবদহ মহাবিদ্যালয়,

৪৭. বরভাগ মাধ্যমিক বিদ্যালয় বাঘারপাড়া,

৪৮. কয়ালখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিয়ালপাড়া,

৪৯. পদ্মবিলা ফাযিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসা,

৫০. রঘুনাথপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,

৫১. সুবর্ণখালি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, শার্শা,

৫২. মিউনিসিপ্যাল প্রিপারেটরী উচ্চ বিদ্যালয়, যশোর,

৫৩. যশোর জিলা স্কুল,

৫৪.দাউদ পাবলিক স্কুল,

৫৫. মুসলিম একাডেমী যশোর,

৫৬. ঝিকরগাছা এম. এল মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ঝিকরগাছা, যশোর,

৫৭. ঝিকরগাছা বি এম মাধ্যমিক বিদ্যালয়,

৫৮.এসএন গাতিপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, শার্শা,

৫৯. ঝিকরগাছা দারুল উলূম কামিল মাদ্রাসা,

৬০. জামিয়া আরাবিয়া মুহিউল ইসলাম মাদ্রাসা,

৬১. জামিয়া এজাজিয়া দারুল উলুম, যশোর,

৬২. যশোর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,

৬৩. যশোর জামিয়া ইসলামিয়া,

৬৪. দারুল আরকাম মাদ্রাসা যশোর,

৬৫. সোনদিয়া গাতিপাড়া দাখিল মাদ্রাসা,

৬৬. উপশহর মহাবিদ্যালয়, যশোর,

৬৭. চৌগাছা সরকারী শাহাদৎ পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়,

৬৮. গোড়পাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শার্শা,

৬৯. বাগআঁচড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, শার্শা, যশোর,

৭০. ২৯ নং উপশহর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,

৭১. চৌগাছা হাজী সরদার মর্ত্তজ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়,

৭২. সরকারী শিক্ষক প্রশিক্ষণ মহাবিদ্যালয়, যশোর,

৭৩. মুনসেফপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়,

৭৪. বিমান বাহিনী একাডেমী,

৭৫. দারুল আরকাম মাদ্রাসা যশোর,

৭৬. উপশহর শিক্ষক প্রশিক্ষণ মহাবিদ্যালয়, যশোর,

৭৭. বেনেয়ালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,

৭৮. বাদশাহ ফয়সল ইসলামী ইনস্টিটিউট, ঈদগাহ, যশোর,

৭৯. গঙ্গানন্দপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়,

৮০.সম্মিলনী ইনস্টিটিউশন যশোর.

৮১. বাদশাহ ফয়সল ইসলামী ইনস্টিটিউট, উপশহর, যশোর,

৮২. নব-নগরী বালিকা বিদ্যালয়, উপশহর, যশোর,

৮৩. এফ জে ইউ বি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বেনেয়ালী, ঝিকরগাছা।

এছাড়াও আরও সুনাম ধন্য শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান এই জেলায় রয়েছে।

 

যশোর জেলা

যশোর জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহঃ

যশোর অনেক পুরাতন শহর। এই শহরের ইতিহাস আর ঐতিহ্য অনেক। এই জেলায় প্রাচীনকালের নানা স্থাপনা, জমিদার বাড়ি, প্রাকৃতিক নদ-নদী, বিভিন্ন পার্ক, বড় বড় ইমারত, শিল্পকারখানাসহ অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। চলুন আজকে জেনে নেওয়া যাক যশোর জেলার সুন্দর সুন্দর দর্শনীয় স্থানগুলোর নাম সমূহ-

১. যশোর ক্যান্টনমেন্ট,

২. যশোর বিমানবন্দর,

৩. বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র,

৪. চাঁচড়া জমিদার বাড়ি,

৫. যশোর ইনস্টিটিউট,

৬. ফুলের হাট গদখালি,

৭. তাপস কুটির (কাস্টমস অফিস),

৮. যশোর ইনস্টিটিউট পাবলিক লাইব্রেরী,

৯. বেনাপোল স্থল বন্দর,

১০. যশোর পৌর পার্ক,

১১. সাগরদাড়ী, মাইকেল মধুসূদন দত্ত এর বাড়ি,

১২. এগারো শিব মন্দির,

১৩. আকিজ সিটি,

১৪. লালদীঘির পাড়,

১৫. শ্রীধরপুর জমিদার বাড়ি,

১৬. মনিহার সিনেমা হল,

১৭. বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখের সমাধি,

১৮. বিনোদিয়া পার্ক,

১৯. উপশহর পার্ক,

২০. যশোর বোট ক্লাব,

২১. জেস গার্ডেন পার্ক,

২২. যশোর আইটি পার্ক,

২৩. ‍মির্জা নগর নবাব বাড়ি,

২৪. ভরত রাজার দেউল (ভরত ভায়না)

২৫. কালেক্টরেট পার্ক,

২৬. তালখড়ি জমিদার বাড়ি,

২৭. চিত্র পরিচালক নওরেশ মিত্রের বাড়ি,

২৮. বিপ্লবী অরবিন্দ ও বারিণ ঘোষ সহোদরের মামা বাড়ি, সাগরদাড়ী, যশোর,

২৯. বাংলা উপন্যাসিক নিমায় ভট্টাচার্য্যের বাড়ি,

৩০. ঝাঁপা ভাসমান সেতু,

৩১. নির্বাক যুগের টালিগঞ্জ চলচিত্রকর ধীরাজ ভট্টাচার্য্যের বাড়-পাজিয়া, কেশবপুর,

৩২. বৈদ্যনাথ তলা মন্দির, পাঁচ বাড়িয়া, সদর, যশোর,

৩৩. মাইকেল বংশভ্রাতৃদুহিতা মানকুমারী বসুর বাড়ি

৩৪. বাবা বৈদ্যনাথ ধাম মন্দির, খেদাপাড়া ও

৩৫. জগদীশপুর তুলার ফার্ম।

এছাড়াও নতুন নতুন আরও সুন্দর সুন্দর ভ্রমণের জায়গা এখন তৈরী হচ্ছে।

আপনারা এই সুন্দর জেলাকে ঘুরে দেখতে পারেন। আপনাদের মন অনেক প্রফুল্ল হয়ে যাবে।

ভ্রমণ মানুষের অসুস্থ রুগ্ন মনকে সতেজ করে তুলে। আপনি সারা বছর অফিসের কাজ করতে করতে যখন আপনার মনে এক ধরনের অশান্তি বা ক্লান্তি অনুভব হয়, তখন আপনি সব ছেড়ে ভ্রমনে বেরিয়ে পড়ুন দেখবেন আপনার মন প্রকৃতির ছোঁয়ায় সতেজ হয়ে গেছে।

 

 

যশোর জেলা

যশোর জেলার নদ-নদী সমূহঃ

বাংলাদেশ নদী মাতৃক দেশ। এই দেশের বুক চিড়ে অসংখ্য নদ-নদী অনবরত ছুটে চলেছে। এদেশ কৃষি প্রধান দেশ। তাই এ দেশের মানুষ কৃষি করে থাকেন। আমাদের দেশের মোট জনসখ্যার প্রায় ৮০ ভাগ লোকই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষি কাজের সাথে জড়িত। বর্তমানে দেশে কৃষি জমির পরিমান অনেক কমে যাচ্ছে।আর তাছাড়াও উৎপাদনে অনেক জটিলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার কারণে আজকে ফলসের ঘাটতি লক্ষ করা যাচ্ছে। এর ফলে আজকে আমাদের সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা দেশটির জন্য বাহিরের দেশ হতে অনেক কৃষি পণ্য আমদানী করে আমাদের দেশের জনগনের চাহিদা মেটাতে হয়।

নদী থাকার কারণে প্রতি বছর বর্ষার মৌসুমে আমাদের কৃষি জমিতে নদীর পানির সাথে অনেক পলি মাটি এসে জমিতে পড়ে থাকে।যার কারণে আমাদের জমিগুলো অনেক উর্বর হয়। পলি মাটি কৃষি জমিকে অনেক উর্বর করে। আর এই উর্বর জমিতে প্রচুর পরিমাণে ফসল উৎপন্ন হয়। আবার আরেক দিকে আমাদের জন্য নদী অভিশাপ। কারণ বর্ষার মৌসুমে নদীর ভাঙ্গন শুরু হয়, প্লাবিত হয় অসংখ্য ফসলের মাঠ, রাস্তাঘাট, বাড়িঘর ইত্যাদি। প্রতি বছর নদীর কারণে আমাদের দেশের বিপুল পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে। কিন্তু নদী আমাদের জন্য আশীর্বাদ। কারণ কৃষিই আমাদের একমাত্র সম্বল। নদী আমাদের উর্বর পলি মাটি দান করে বলেই আমাদের দেশে এত পরিমাণে ফসল উৎপাদিত হয়। তাছাড়াও নদীতে অসংখ্য প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। জেলেরা মাছ ধরেই তাদের জীবন ও জীবিকা পরিচালনা করে থাকেন। আমাদের জাতীয় মাছ ইলিশ নদী হতেই আমরা পেয়ে থাকি। যা বিশ্বের অন্য কোনো দেশে নেই । আমরা নদীর ইলিশ বিদেশে রপ্তানী করি এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশের রাজস্ব খাতে অবদান রাখতে পারি।

তো চলুন যশোর জেলার নদ-নদীর গুলোর নামের তালিকা-

১.  ভৈরব নদ,

২. চিত্রা নদী,

৩. ভবদহ বিল,

৪. বুকভরা বাওড়,

৫. কপোতাক্ষ নদ,

৬. পদ্ম বিল চাকলা,

৭. ঝাঁপা বাওড়,

৮. বেতনা নদী,

৯. কালিয়ানীল বিল বা বাহাদুরপুর বাওড়,

১০. মযুদখালী নদী,

১১. কুটিবাড়ি বিল মাটিপুকুর,

১২.  শার্শা কন্যাদাহের আশ্চর্য বাওড় ও

১৩. হরিহর নদ।

এছাড়াও আরও ছোট ছোট বিল পুকুর ডোবা এই জেলায় রয়েছে। সেখানে মাছ চাষ করা হয়। চিংড়ি এই জেলার অন্যতম মৎস্য সম্পদ। প্রচুর পরিমাণে চিংড়ি এই জেলায় চাষ হয় আর তা বাংলাদেশসহ দেশের বাইরে রপ্তানী করা হয়।

 

যশোর জেলার বিশিষ্ট ব্যক্তি বর্গের নাম-

বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায়ই এমন কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তির বসবাস যারা সারা দেশের মধ্যে অন্যতম । যারা দেশের জন্য শুরু থেকেই লড়ে যাচ্ছেন।এই জেলায় অনেক কবি সাহিত্যিক, লেখক-গবেষক এর জন্ম।

আসুন জেনে নিই সেই সব মানুষের নাম-

১. আনোয়ারা সৈয়দ হক,

২. কেরামত মওলা,

৩. ফারজানা রিক্তা,

৪. হামিদা রহমান,

৫. রশিদ আলী,

৬. হাজারীলাল তরফদার,

৭. শেখ আকিজ উদ্দীন,

৮. শামসুদ্দিন টগর,

৯. মোহাম্মদ মনিরুজ্জান,

১০. ইজাজ আহম্মেদ- তিনি একজন কবি ও অভিনেতা।তার জন্ম ১৯৯১ সালের ২৪ শে আগস্ট।

১১. মাইকেল মধুসূদন দত্ত- ঊনবিংশ শতাব্দির বাঙালী কবি ও নাট্যকার। তার জন্ম ১৮২৪ সালের ২৫শে জানুয়ারী এবং মৃত্যু বরণ করেন ১৮৭৩ সালের ২৯শে জুন।

১২. ফররুখ আহমদ- তিনি রুপসী বাংলার মুসলিম রেনেসাঁর কবি। তিনি ১৯১৮ সালের ১০ই জুন জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৭৪ সালের ১৯ অক্টোবর মৃত্যু বরণ করেন।

১৩. বাঘা যতীন- বাঘা যতীন ছিলেন এক বিপ্লবী নেতা, তিনি ভারতের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নী যুগের শহীদ বিপ্লবী।

১৪.  কিরণচন্দ্র মখোপাধ্যায়- তিনি ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নীযুগের বিপ্লবী।তার জন্ম ১৮৯৩ সালে এবং মৃত্যু বরণ করেন ১৯৫৪ সালে।

১৫. সরোজ দত্ত- তিনি ভারতীয় বাঙালী বামপন্থী বুদ্ধিজীবী ও রাজনীতিবিদ।

১৬. গোলাম মোস্তফা- তিনি একজন মুসলিম রেনেসাঁর কবি। তার জন্ম ১৮৯৭ সালে এবং মৃত্যু বরণ করেন ১৯৬৪ সালে।

১৭. শাবনুর- তিনি ৯০ দশকের বাংলা চলচিত্রের একজন সুনামধন্য নায়িকা। তার অনেক ছবি এখনও আমাদের কাছে জনপ্রিয়। তারা মোটামুটি সুস্থ চলচিত্র জগৎ আমাদের উপহার দিয়ে গেছেন। আর বর্তমান চলচিত্র নষ্ট করতেছে যুব সমাজ।

১৮.শাহ মোহাম্মদ ফারুক- তিনি একজন সুনামধন্য বৈজ্ঞানিক।

১৯. কোহিনুর আক্তার চম্পা- তিনি ৮০ এর দশকের বাংলা চলচিত্রের একজন নায়িকা। তিনি অসংখ্য বাংলা ছায়াছবিতে অভিনয় করেছেন।

২০. ফরিদা আক্তার ববিতা- তিনি ৮০ এর দশকের বাংলা চলচিত্রের একজন নায়িকা। তিনি অসংখ্য বাংলা ছায়াছবিতে অভিনয় করেছেন।

২১. গুলশান আরা চম্পা- তিনি ৮০ এর দশকের বাংলা চলচিত্রের একজন নায়িকা। তিনি অসংখ্য বাংলা ছায়াছবিতে অভিনয় করেছেন।

২২. আবুল হোসেন- তিনি একজন বাঙালী কবি, তার জন্ম ১৯২২ সালের ১৫ই আগস্ট এবং মৃত্যু ২০১৪ সালের ২৯ শে জুন।

২৩. ড. মোহাম্মদ লুৎফর রহমান- মানবতাবাদী এবং প্রখ্যাত সাহিত্যিক। তাহার জন্ম ১৮৯৭ সালে এবং মৃত্যু ১৯৩৬। তিনি ক্ষণ জন্মা একজন মানুষ।

২৪. ইলা মিত্র- তিনি একজন বিপ্লবী কৃষক নেতা। তার জন্ম ১৯২৫ সালের ১৮ অক্টোবর এবং মৃত্যু ২০০২ সালের ১৩ অক্টেবর।

২৫. রাধাগোবিন্দ চন্দ্র- তিনি একজন জ্যোতির্বিজ্ঞানী, তার জন্ম ১৮৭৮ সালের ১৬ই জুলাই এবং মৃত্যু ১৯৭৫ সালের ৩রা এপ্রিল।

২৬. ইকবাল কাদির- তিনি বাংলাদেশের গ্রামীণফোনের প্রতিষ্ঠাতা।গ্রামীণফোন তিনি বাঙালীর গ্রামীন জীবনের মধ্যে বিস্তার ঘটিয়েছেন। বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে আজ গ্রামীণফোন পৌঁছে গেলে তার অবদানের কারনেই।

২৭. অবনীভূষণ চট্টোপাধ্যায়- তিনি একজন গনিতজ্ঞ ও বিশিষ্ট লেখক।

২৮. দীনেশ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়- শিশু সাহিত্যিক ও একজন সম্পাদক।

২৯. রসিকলাল চক্রবর্তী- তিনি একজন সঙ্গীতজ্ঞ।

৩০. হাসিবুর রেজা কল্লোল- তিনি বাঙালী চলচিত্রের একজন পরিচালক।

৩১. আব্দুল্লাহ আল মামুন- তিনি একজন বাংলাদেশী ক্রিকেটার, তার জন্ম ১৯৯০ সালে ও

৩২. রাজা প্রতাপাদিত্য।

এছাড়াও এই জেলায় অনেক কৃতি সন্তানদের জন্ম । যারা আড়ালে থেকেই দেশ গড়ার কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা প্রত্যেকটা লোকের কাছেই চির কৃতজ্ঞ।

 আমাদের এই পোস্টে যদি কোনো ভুল তথ্য পেয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আমাদের নিচে কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে কমেন্ট করে জানাবেন। আর আপনার কাছে যদি নতুন কোনো তথ্য থাকে তাও আমাদেরকে জানাবেন। আপনার মতামত আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আপনার তথ্যের সত্যতা যাচাই করে আমাদের ব্লগে আপডেট করার চেষ্ট করব ইনশাআল্লাহ।

আরও পড়ুন-

গাজীপুর জেলার পরিচিতি

জামালপুর জেলার পরিচিতি

রংপুর জেলার পরিচিতি

কুষ্টিয়া জেলার পরিচিতি

মানিকগঞ্জ জেলার পরিচিতি

 

 

 

 

 

 


Previous Post
Next Post

0 comments:

Thank you sharing for your comment