Thursday, December 14, 2023

এসএসডি-SSD ও এইচডিডি-HDD এর মধ্যে পার্থক্য

এসএসডি-SSD ও এইচডিডি-HDD এর মধ্যে পার্থক্য

এসএসডি ও এইচডিডি এর মধ্যে পার্থক্য
Picture - SSD

কেন আপনি  এসএসডি কিনবেন?
আপনার পিসি বা ল্যাপটপকে আজই ফাস্ট করে ফেলুন।
মাত্র ৮-১৩ সেকেন্ডে আপনার ল্যাপটপ বা পিসি অপেন হবে যে কাজটি করলে।
আপনি কোন কোম্পানির এসএসডি কিনবেন?

আজকের পোস্টে আপনার এইসব প্রশ্নের উত্তর নিয়ে চলে এসেছি। তো জানতে নিচের সম্পূর্ণ

লেখাটি পড়ুন।


টেকনোলজী দিন দিন মানুষের হাতের মুঠোয় চলে আসতে শুরু করেছে। আর দিন যত সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে ঠিক টেকনোলজীগুলোও কিন্তু ক্রমশ বড় থেকে আকারে  ছোট হয়ে চলেছে। তবে এর গতি বা স্পীড কিন্তু কখনই কমে যাচ্ছে না। 

বরং আগের চাইতে কয়েক গুন দ্রুত গতি সম্পন্ন হয়ে বাজারে বা মানুষের হাতে আসছে। যেমনি আমরা দেখতে পাই হার্ডডিস্ক বা এইচডিডি(HDD)। এটির সাথে আমরা অনেক আগে থেকেই পরিচিত।কারণ আমাদের পিসি বা ল্যাপটপের ডাটাগুলো স্টোরেজ করতে বা ডাটাকে সংরক্ষিত রাখতে এটির ব্যবহার করে আসছি।

 কিন্তু আমরা এটি ব্যবহার করে তেমন দ্রুত  গতির সাথে আমাদের কাজগুলো করতে পারছি না। কারণ এটির গতি অনেক কম বা ধীরগতির। আমরা যখন আমাদের পিসিতে কোনো কাজ করার জন্য আমাদের কম্পিউটারের মধ্যে ব্যবহৃত এইচডিডিতে (HDD) থাকা তথ্য বা ডাটাকে এক্সেস করতে যাই ঠিক, তখনই আমরা বুঝতে পারি আমাদের হার্ডডিস্কের গতির বিষয়টা। আমরা আমাদের কমান্ড দেবার ঠিক কত টাইম পর সেটি আমাদের ওয়ার্ক প্যানেল বা মনিটরে দেখতে পাই সেটিকে রেসপন্স টাইম বলে।

আর রেসপন্স টাইম যত দ্রুত হবে, আমাদের কাজটিও তত দ্রুততার সাথে করতে পারব।

আর তাছাড়া আমরা আমাদের পিসিতে যে অপারিটিং সিস্টেমটি ( উইন্ডোজ টি যেমন ৭, ৮.১, ১০ বা ১১) ব্যবহার করে থাকি সেটি অপেন হতে বা বুট হতে অনেক বেশি সময় ব্যয় করে। মূলত রেসপন্স টাইমের উপর ভিত্তি করেই বাজারে হার্ডডিস্কের বিকল্প হিসেবে প্রায় ৮০ গুন বেশি দ্রুত গতির একটি স্টোরেজ ডিভাইস এসেছে। সেটির নাম হলো সলিড স্টেট ডিভাইস বা এসএসডি(SSD)। এটির রেসপন্স টাইম খুবই কম। আপনি কল্পনাই করতে পারবেন না এত দ্রুত কিভাবে এটি কাজ করে।

চলুন আজকে আমরা সেটিরই কিছু তথ্য আপনাদেরকে দিই। 

HDD (Hard Disk Drive) / হার্ডডিস্ক ড্রাইভ।

প্রথমে আমরা হার্ডডিস্ক সম্পর্কে জেনে নিই।

১). হার্ডডিস্ক তৈরী করে আইবিএম কোম্পানী ১৯৫৬ সালে।

২). হার্ডডিস্কের মধ্যে কিছু স্পিনিং প্লেট থাকে। যা মূলত একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে ঘুরতে থাকে। যার ফলে সেখান থেকে ডাটা বা তথ্যগুলো আমাদের কম্পিউটারে রিড ও রাইট হয়ে থাকে।

৩). এতে ম্যাগনিটিজম ব্যবহার করা হয় স্পিনিং প্লেটে ডাটা স্টোর করার জন্য।

৪). স্পিনিং প্লেটের উপর একটা ডাটা রিড রাইট হেড থাকে। এই হেড দ্বারা ডাটাকে রিড করে প্রসেসিং এর মাধ্যমে মনিটরে দেখানো হয়। এবং অনান্য অপারেশন সম্পন্ন করা হয়।

৫). হার্ডডিস্কে থাকা প্লেটটি যত দ্রুত ঘুরবে তত দ্রুত গতিতে ডাটা রিড ও রাইট হবে। আর এই ঘোড়ার গতিতে বলা হয় রিড রাইট স্পিড বা রেসপন্স টাইম।

৬). এটিতে কিছু মুভিং পার্টস থাকায় ড্যামেজ বা নষ্ট হবার পরিমান বেশি থাকে। 

৭). এটিতে মুভিং পার্টস থাকায় এটি অনেক গরম হয়

৮). বিদ্যুৎ খরচ বেশি করে এটি।

৯). মুভিং পার্টস থাকার ফলে কিছুটা শব্দও হয়ে থাকে

১০). এইচডিডি থাকা একটি পিসি বা ল্যাপটপ অপেন হতে মিনিমাম সময় লাগে ৩০ সেকেন্ড - ১ মিনিট বা তারও বেশি সময়।

১১). এইচডিডিতে থাকা ডাটা কপি বা কাট করতে বেশি সময় লাগে। সাধারণত এটিতে ৫০ এমবিপিএস বা ১২০ এমবিপিএস স্পীড থাকে।

১২. এটির ওজন তুলনামূলক অনেক বেশি।

১৩. দাম এসএসডির তুলনায় অনেক কম।

১৪. ফাইল ডিলেট হয়ে গেলে সহজে উদ্ধার করা যায়। অনেক সহজ সাধ্য ব্যাপার এবং ব্যয় কম। যদিও এটি ডিপেন্ড করে আপনার এইচডিডির ফিজিক্যাল কন্ডিশনের উপর।

১৫. আকার বড়।

প্রথম দিকে যখন বিকল্প কিছু ছিল না তখন এগুলোই আমাদের কাছে অনেক দ্রুত গতির মনে হত। বর্তমানে বিকল্প থাকার কারণে আমরা হার্ডডিস্কের ব্যবহার অনেকটা কমিয়ে দিয়েছি।


এখন আমরা এসএসডি সম্পর্কে জানব।

SSD (Solid State Drive) / সলিড স্ট্রেইট ড্রাইভ।

এসএসডি মানে সলিড স্টেট ড্রাইভ। সাধারণত পেনড্রাইভ বা মেমোরিতে যে ধরনের মেকানিজম ব্যবহার করা হয়। এসএসডিতেও সেইম মেকানিজম ব্যবহার করে তৈরী করা হয়।

১. এটাতে কিছু ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট ব্যবহার করে ডাটা স্টোর বা জমা করা হয়।

২. ফিজিক্যাল মুভিং কোনো পার্টস নেই বলে সহজে নষ্ট বা ড্যামেজ হবার সম্ভাবনা অনেক কম।

৩. ফিজিক্যাল মুভিং পার্টস না থাকায় শব্দও হয় না।

৪. ফিজিক্যাল মুভিং পার্টস না থাকায় এটি গরমও অনেক কম হয়।

৫. ফিজিক্যাল মুভিং পার্টস না থাকায় বিদ্যুৎ খরচও অনেক কম হয়

৬. ডাটার রিড রাইট স্পিড এইচডিডির এর তুলনায় কমপক্ষে ৮০ গুন বেশি।

৭. এসএসডি থাকা পিসি বা ল্যাপটপের অপেনিং প্রক্রিয়া বা বুট প্রক্রিয়া অনেক দ্রুত। ৮ - ১৩ সেকেন্ড সময় লাগে সর্বোচ্চ।

৮. এটির ওজন অনেক কম।

৯. দাম এইচডিডির তুলনায় অনেক বেশী। প্রায় ৮-১০ গুন বেশি দাম

১০. ফাইল ডিলেট হয়ে গেলে সহজে উদ্ধার করা যায় না। অনেক কষ্ট সাধ্য ব্যাপার এবং ব্যয়বহুল। যদিও এটি ডিপেন্ড করে আপনার এসএসডির ফিজিক্যাল কন্ডিশনের উপর

১১. আকারে অনেক ছোট।

১২. এতে হার্ডডিস্কের মত ঘূর্ণায়মান কোনো ডিস্ক নেই। এতে ব্যবহার করা হয়েছে কিছু ইলেকট্রিক চিপের। এগুলোর মাধ্যমে ডাটা রিড রাইট হয়।

আপনারা আপনাদের পিসিকে দ্রুত গতির বানাতে চাইলে এসএসডি ব্যবহার করুন। যতি বাজেটের সমস্যা হয় তবে ১২০ জিবি বা ২৫০ জিবির একটি ভালো ব্যান্ডের এসএসডি কিনে সেটিতে শুধুমাত্র অপারেটিং সিস্টেমটি ইনস্টল করুন।

এতে আপনার পিসির গতি আগের তুলনায় বহুগুন বৃদ্ধি পাবে। সকল কাজ দ্রুত করতে পারবেন। কোনো ধরনের হ্যাংক করা ছাড়াই। আর তাছাড়া সামনের দিন গুলোতে আপনারা হার্ডডিস্ক আর পাবেন না। কারণ সেগুলো বাজারে আসা বন্ধ হয়ে যাবে। রাজত্ব থাকবে একমাত্র এসএসডির। কাজেই দ্রুত মুভ করুন এসএসডিতে।

কয়েকটি এসএসডি ব্যান্ডের নাম হলো -

১. সিগেট ব্রারাকুডা-Seagate,

২. স্যামসাং-Samsung,

৩. ট্রান্সসেন্ড-Transcend,

৪. এডাটা-Adata,

৫. এইচপি-HP,

৬. রামাস্তা-Ramasta,

৮. পিএনওয়াই-PNY,

৯. টিম-Team 

১০. স্যানডিস্ক-Sandisk

ভালোমানের এসএসডি ও বিস্তারিত জানতে লিংকে ক্লিক করুন।

উইন্ডোজ ১০ ও ১১ এর অটোমেটিক আপডেট বন্ধ কিভাবে করে জানতে এখানে ক্লিক করুন।




Tuesday, December 12, 2023

চুয়াডাঙ্গা জেলা

 

চুয়াডাঙ্গা জেলা

চুয়াডাঙ্গা

ছবি - আট কবর

চুয়াডাঙ্গা জেলার সকল দর্শনীয় স্থানের নাম সমূহ,
চুয়াডাঙ্গা জেলার মোট জনসংখ্যা কত?
চুয়াডাঙ্গা জেলার মোট ভোটার সংখ্যা কত?
চুয়াডাঙ্গা জেলায় কতটি উপজেলা রয়েছে?
চুয়াডাঙ্গা জেলার থানার সংখ্যা কতটি?
চুয়াডাঙ্গা জেলায় কতটি পৌরসভা রয়েছে?
চুয়াডাঙ্গা জেলার গুরুত্বপূর্ণ ও সুনামধন্য শিক্ষা - প্রতিষ্ঠানের নামগুলো।
চুয়াডাঙ্গা জেলার বিখ্যাত গুনীজন কারা?


আজকের আলোচনা বাংলাদেশের বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা বিভাগের একটি প্রশাসনিক জেলা চুয়াডাঙ্গা জেলাকে নিয়ে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা বাংলাদেশের প্রথম দারিদ্রমুক্ত ও নিরক্ষর জেলা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।

বাংলাদেশের মধ্যে সর্ব প্রথম যে ডাকঘরটি স্থাপিত হয় তার নাম ”চুয়াডাঙ্গা ডাকঘর”

১৮৬০ সালে বৃটিশ ভারতের সময় বাংলাদেশের বর্তমান চুয়াডাঙ্গা অংশে স্থাপিত হয়। ১৮৬০ সালে বাংলাদেশ নামে কোনো দেশ বা রাষ্ট্র ছিল না। আর ১৮৬২ সালে বাংলাদেশের প্রথম রেলওয়ে স্টেশন এই জেলায় তৈরী হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার অনেক আগে থেকেই এই জেলায় যোগাযোগ গড়ে উঠেছিল।

এখান থেকেই বাংলাদেশের চিঠি ও ডাক যোগাযোগের সূচনা হয়। এর পর আস্তে আস্তে সারা দেশের প্রতিটি জেলা শহর থেকে শুরু করে উপজেলা  ও ইউনিয়ন পর্যায়ে ডাকঘরের কার্যক্রম শুরু হয়। তখকার দিনে যোগাযোগের জন্য চিঠিই ছিল একমাত্র মাধ্যম।

মানুষ তার আপন জনের বা অফিস, আদালতের সমস্ত খবরাখবর এই ডাক যোগেই সম্পন্ন করে থাকতেন। ঢাকা শহর হতে আপনার নামে একটি চিঠি পাঠানো হলো। সেটি কিভাবে আপনার কাছে  পৌঁছাবে? তখনকার দিনে বর্তমানের মতো এত আধুনিক প্রযুক্তি ছিল না।

আমরা এখন মিলি সেকেন্ডেই এক দেশের খবর, সংবাদ, পত্রিকা সহ বিভিন্ন ধরনের তথ্য মুহূর্তেই পেয়ে যাই।আর তখন আপনাকে চিঠি পাঠানোর জন্য আপনার ঠিকানা সহ পোস্ট অফিস হতে ডাক টিকিট ক্রয় করে খামে করে আপনার ঠিকানায় পাঠানো হত।

আর এই মাধ্যম টি বহন করতেন সরকারীভাবে একজন ডাক পিয়ন। তিনি তার ডাকঘরের নামে যত ধরনের খাম বা চিঠি আসত, সেগুলোর ঠিকানা অনুযায়ী তার বাসায় পৌঁছে দিতেন। আর এই পুরো প্রসেসটি সম্পন্ন হতে প্রায় ৭ থেকে পনের দিন সময় লেগে যেত।

যার ফলে আপনাকে জরুরীভাবে কোথাও ডাকা হলে আপনার পর্যন্ত খবর আসতে আসতে অনেক সময় নষ্ট হয়ে যেত। ঘটনা এমনও শোনা গেছে, শহর থেকে অনেক দূরে প্রত্যান্ত অঞ্চল, সেখানকার একজন ছাত্র শহরে চাকুরীর পরীক্ষা দেওয়ার পর তার ঠিকানায় চাকুরীর নিয়োগ পত্র পৌঁছে যেতে দেরী হবার কারণে তার চাকুরী অন্যজন পেয়ে যেত।শুধুমাত্র আমাদের দেশের যোগাযোগ মাধ্যম উন্নত ছিল না বলে।

আর আজকে আমরা আপনার এমন উন্নত যোগে পৌঁছেছি যেখানে ঘন্টা বা মিনিট নয় প্রতি মিলি সেকেন্ড সময়ের মধ্যে আমরা আমাদের যোগাযোগ সম্পন্ন করতে সক্ষম। আর তাছাড়াও আমাদের দেশের প্রতিটি গ্রামে পর্যন্ত আমরা পরিবহন যোগে যেতে পারি খুব সহজে এবং কম সময়ের মধ্যে।

 

চুয়াডাঙ্গা জেলার ইতিহাস -

চুয়াডাঙ্গা জেলার ইতিহাস অনেক পুরোনো গ্রীক ঐতিহাসিকদের মতে, এই অঞ্চলেই নাকি বিখ্যাত গঙ্গাডিরাই রাজ্য ছিলআর তখন গাঙ্গেয় নামক একটি শহরও এই স্থানে গড়ে উঠেছিল এই জেলার নামকরণের ইতিহাস লোকমুখ হতে শোনা যায়, এই এলাকায় নাকি আদিকালে মল্লিক বংশের আদি পুরুষ চুঙ্গো মল্লিকের বসবাস ছিল

যার নামানুসারেই হয়তো এই এলাকার নামকরণ করা হয়েছে ইতিহাস থেকে জানা যায় ১৭৪০ সালের দিকে চুঙ্গো মল্লিক তার স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে ( ছেলে আর মেয়ে) কে নিয়ে ভারতের মুর্শিদাবাদ নদীয়া জেলার সীমানায় অবস্থিত ইটেবাড়ি মহারাজপুর থেকে এই মাথাভাঙ্গা নদীপথ ধরে এই স্থানে এসে প্রথম বসতি গড়ে তুলেনপরে ১৭৯৭ সালের এক রেকর্ডে স্থানের নাম চুয়াডাঙ্গা নামে উল্লেখ করে লেখা হয়

ফারসি শব্দ থেকে ইংরেজিতে এই স্থানের নাম অনুবাদ করার সময় অনেকটা বিকৃত হয় বলে পরে তা উচ্চারণের সুবিধার্থে চুয়াডাঙ্গা নামটির উৎভব হয় এছাড়াও আরও জানা যায় যে, এই অঞ্চলের লোকজন পরিষ্কারকে বলে চুয়া

 আর স্থানটি এক সময় অনেক পরিষ্কার ছিল। এবং স্থানকে এরা ডাঙ্গা বলে থাকেন। আর এই দুই শব্দের সমন্বয়েই চৃয়াডাঙ্গা নামটির প্রচলন শুরু হয়। তবে দুটি উদাহরণই অনেক গুরুত্বপূর্ণ বলে সবাই মনে করে থাকেন।

আর ১৯৬০ সালে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা গঠিত হলেও এর কার্যক্রম শুরু হয় মূলত ১৯৭২ সাল থেকেই।

 

জেলার আয়তন, ভোটার সংখ্যা, জনসংখ্যা -

চুয়াডাঙ্গা জেলার মোট আয়তন ১১৭০.৮৭ বর্গ কি.মি. এই জেলার মোট জনসংখ্যা ১২,৩৪,০৬৬ জন (২০২২ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী)

জেলার মোট ভোটার সংখ্যা ,৩৭,১১৯ জন (২০১৮ সালের নির্বাচনী তথ্য হালনাগাদ অনুযায়ী) । এর মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা রয়েছে ৪,১৮,৫১২ জন এবং নারী ভোটার সংখ্যা রয়েছে ৪,১৮,৫৯১ জন।

 

জেলার প্রশাসনিক এলাকা সমূহ -

এই জেলাটি মোট ৪টি উপজেলা এবং ৪টি পৌরসভা এবং ৫টি থানা, ৩৮টি ইউনিয়ন, ৩৭৬টি মৌজা নিয়ে গঠিত।

এই এলাকায় মোট ২টি সংসদীয় আসন রয়েছে। চুয়াডাঙ্গা- (আলমডাঙ্গা, দর্শনা) চুয়াডাঙ্গা- (চুয়াডাঙ্গা সদর, দামুড়হুদা জীবননগর) আসন।

৪টি উপজেলার নামগুলো হলো-

. আলমডাঙ্গা,

. চুয়াডাঙ্গা সদর,

 .দামুড়হুদা

. জীবননগর উপজেলা।

আর ৫টি থানার নামগুলো হলো-

.আলমডাঙ্গা,

 . চুয়াডাঙ্গা সদর,

 . দামুড়হুদা,

. জীবননগর

 . দর্শনা থানা।

আর ৪টি পৌরসভার নামগুলো হলো-

. আলমডাঙ্গা, . চুয়াডাঙ্গা সদর, . জীবননগর . দর্শনা পৌরসভা।

জেলার নদ-নদী সমূহ -

বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এই দেশের বুক চিরে বয়ে গেছে অসংখ্য নদ-নদী, খাল-বিল সাগর-সমুদ্র

নদী আর বাংলার মানুষের জীবন একে অন্যের সাথে গভীরভাবে মিশে আছে। নদীই এদেশের প্রাণ। কারণ বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ আর এই দেশের মাটি অনেক উর্বর। আর উর্বর বলেই এত বেশি ফসল জন্মায় এই মাটিতে। আর এই জমি উর্বর হবার একমাত্র কারণ নদী।

 বর্ষায় পানির সাথে নদী দিয়ে পলি মাটি জমিতে এসে পড়ে। আর এই পলি মাটি যেসকল জমিতে পড়ে থাকে সেখানে প্রচুর পরিমাণে ফসল উৎপাদন হয়।

আর নদী শুধু পলি মাটিই দেয় না। এটি আমাদের দেশের শুষ্ক মৌসুমে জমিকে শুষ্কতার হাত থেকেও রক্ষা করে। জেলেরা নদী থেকে মাছ শিকার করে জীবিকা উপার্জন করে আমরা মাছের চাহিদা এই নদীর মাছ থেকেই মিটাই।

 তাই নদীর গুরুত্ব আমাদের জন্য অত্যন্ত।

 

জেলায় মোট পাঁচটি নদী রয়েছে

জেলার প্রধান প্রধান নদীর নামগুলো হলোঃ

. মাথাভাঙ্গা, . ভৈরব, . চিত্রা, . কুমার . নবগঙ্গা।

এসব নদী ছাড়াও আছে অনেক বড় বড় জলাশয়, ডুবা, পুকুর, বিল ইত্যাদি। এগুলোও আমাদের কৃষির জন্য অনেক অবদান রাখে।এগুলোতে প্রাকৃতিক ভাবে এবং কৃত্রিমভাবে মাছের চাষ করা হয়। সরকারী এবং বেসরকারী উভয়ভাবেই মৎস উৎপাদন করে মাছের চাহিদা পূরণ করা হচ্ছে।

 

 

জেলার শিক্ষা ব্যবস্থাপনা -

আজ বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় শিক্ষার আলো পৌঁছে গেছে। কোথাও বাদ নেই বললেই চলে। মানুষ ধনী হউক আর গবির হউক সমস্যা নেই বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য জন্য যে পাঁচটি মৌলিক অধিকারের কথা উল্লেখ আছে, তারমধ্যে শিক্ষা অন্যতম। আর আমাদের দেশের মা বাবার তাদের সন্তানকে অনেক কষ্ট করে শিক্ষিত করে গড়ে তোলার চেষ্টা করে থাকেন।

কারণ তারা জানে আগামীতে অশিক্ষিত লোকের জন্য হয়তো বা শারীরিক কায়িক শ্রম ছাড়া আর কোনো ধরনের উপার্জনের রাস্তা থাকবে না। তাই সব পিতা মাতাই তাদের সন্তানকে - বছর বয়স হলেই স্কুলে পাঠায়

এই জেলায়ও তেমন ব্যতিক্রম নেই।

এই জেলায় সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় নেই একটিও তবে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আছে ১টি

মহাবিদ্যালয় আছে মোট ১৯টি। তার মধ্যে বেসরকারী ১৬টি ৩টি সরকারী মহাবিদ্যালয়।

মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে মোট ১৩৭টি, যার মধ্যে সরকারী ২টি এবং বেসরকারী ১৩৫টি।

পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ৫টি, যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে ১টি, পিটিআই আছে ১টি, টিটিসি আছে ১টি।

সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে মোট ৪৪৫টি মাদ্রাসা মোট ৩৯টি। এর মধ্যে কামিল-১টি, দাখিল-২৭টি, আলিম-৪টি ফাজিল ৫টি। এছাড়াও আরও নতুন নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে দিন দিন।

চলুন জেনে নিই চুয়াডাঙ্গা জেলার  সুনামধন্য কিছু শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের নাম সমূহ।

. চুয়াডাঙ্গা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়,

. চুয়াডাঙ্গা সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,

. ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়,

. নাটুদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়,

. কুড়লগাছি মাধ্যমিক বিদ্যালয়,

. মুন্সিগঞ্জ একাডেমী,

. ওসমানপুর প্রাগপুর মাদ্রাসা,

, দামুড়হুদা পাইলট হাই স্কুল,

. মেমনগড় বি. ডি. মাধ্যমিক বিদ্যালয়,

১০. আলমডাঙ্গা বহুমখী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়,

১১. হাটবোয়ালিয়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যলয় কলেজ,

১২. কলা-বাড়ি রামনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়,

১৩. কার্পাসডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়,

১৪. কুনিয়া চাঁদপুর মাদ্রাসা,

১৫. বদরগঞ্জ আলিয়া মাদ্রাসা,

১৬. চুয়াডাঙ্গা পৌর ডিগ্রী কলেজ,

১৭. চুয়াডাঙ্গা সরকারী কলেজ,

১৯. জীবন নগর কলেজ,

২০. দর্শনা সরকারী কলেজ ও

২১. চুয়াডাঙ্গা আদর্শ মহিলা কলেজ।

এছাড়াও আরও অসংখ্য শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান এই জেলায় রয়েছে। আপনারা স্কুল কলেজের তথ্য আরও বিস্তারিত জানতে সরকারী ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। সেখান থেকে আপনারা সঠিক তথ্য পেয়ে যাবেন।


চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ –

সারা সপ্তাহ অফিসের কাজ করে আপনাদের মন অনেক ক্লান্ত হয়ে পড়ে। মনকে সতেজ রাখতে ভ্রমণের দরকার ব্যাপক। মন সতেজ থাকলে আপনার কাজে মন বসবে। আর মন ভালো রাখার জন্য অবশ্যই আপনাকে প্রাকৃতিক পরিবেশের মাঝে হারিয়ে যেতে হবে।

প্রকৃতি মনকে যে আনন্দ বা সতেজতা এনে দিবে অন্য কিছু কিন্তু  তা দিতে পারবে না।

তাই আমরা সব সময় ছুটে যাই সমুদ্র দেখতে, ঝর্ণা দেখতে, পাহাড় দেখতে। আর এগুলো আমাদের হাতের নাগালে না থাকায় কিন্তু আমরা শত চেষ্টা করেও অর্থ জমিয়েও সময়ের অভাবে যেতে পারি না।

তাই আমরা চিন্তা করতে থাকি হাতের নাগালে কি কোনো দর্শনীয় স্থান রয়েছে। যদি থাকে তবে আমাদেও জানা না থাকার ফলে আমরা কিন্তু যেতে পারি না। তাই আজকে আমরা জানব আমাদের নিকটে চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহের নামগুলো।

১. পুলিশ পার্ক - পুলিশ সুপারের কার্যালয় এর সাথে।

২. ডিসি ইকো পার্ক -শিবনগর, দামুড়হুদা, চুয়াডাঙ্গা।

৩. কেরু এন্ড কোম্পানী - দর্শনা, চুয়াডাঙ্গা।

৪. শিশু স্বর্গ - ফেরীঘাট রোড, চুয়াডাঙ্গা।

৫. নাটুদহের আট  কবর - মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া আটজন বীর মুক্তিযোদ্ধার কবর।

৬. চুয়াডাঙ্গার তিন গম্বুজ বিশিষ্ট বড় মসজিদ।

৭. তিয়রবিলা বাদশাহী মসজিদ - তিয়রবিলা, খসকররা ইউনিয়ন, আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা।

৮. শিবনগর মসজিদ।

৯. হাজারদুয়ারী স্কুল - দামুড়হুদা উপজেলা, চুয়াডাঙ্গা।

১০. ঘোলদাড়ী শাহী জামে মসজিদ - ১০০৬ খ্রিষ্টাব্দে ঘোলদাড়ী গ্রামে প্রতিষ্ঠিতি হয়,আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা।

১১.  ঠাকুরপুর জামে মসজিদ - চুয়াডাঙ্গা।

১২.  জামজামি মসজিদ - চুয়াডাঙ্গা।

১৩. নীলকুঠি - কার্পাসডাঙ্গা ও ঘোলদাড়ি, চুয়াডাঙ্গা।

১৪. আলমডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন - ব্রিটিশ আমলে তৈরী এই রেলওয়ে স্টেশন তাই এটি নীলকুঠি   নামেই পরিচিত।

১৫. গড়াইটুপি অমরাবতির মেলা - চুয়াডাঙ্গা।

১৬. কুমারী সাহা জমিদার বাড়ি - চুয়াডাঙ্গা।

১৭. শিয়েল পীরের মাজার - চুয়াডাঙ্গা।

১৮. পাঁচ কবর - মুক্তিযুদ্ধের সময় এখানে ৫জন নিহত হন, হৈবতপুর মদনা, চুয়াডাঙ্গা।

১৯. শরৎচন্দ্র চট্টোপাদ্যায় এর স্মৃতি-বিজড়িত জমিদার বাড়ি - কাশিনাথপুর, চুয়াডাঙ্গা।

২০. হযরত মালেক উল গাউস (রঃ) মাজার শরীফ -গড়াইটুপি, তিতুদহ, চুয়াডাঙ্গা।

২১. রাখাল শাহ এর মাজার - চুয়াডাঙ্গা ও

২২. গনকবর - ধোপখালী, মনোহরপুর, চুয়াডাঙ্গা।

এছাড়াও অনেক সুন্দর সুন্দর পিকনিক স্পট ও রিসোর্ট রয়েছে। আপনারা চাইলে আপনাদের পরিবার সহ সেখানে গিয়ে ভ্রমণ করে আসতে পারেন।


চুয়াডাঙ্গা জেলার বিখ্যাত গুনীজনের তালিকা -

এই জেলায় অনেক গুনী ও বিখ্যাত ব্যক্তির জন্ম। তাদের অবদানে আজকে আমাদের এই সোনার বাংলাদেশ এতদূর পর্যন্ত আসতে পেরেছে। আমরা তাদের অবদান কখনোই ভুলে যাব না।

চলুন জেনে নিই এই জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি বর্গের তালিকা।

১. আসহাবুল হক - বিশিষ্ট চিকিৎসক, রাজনীতিবিদ, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদেও সদস্য ও তৎকালীন কুষ্টিয়া-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।

২. মিঞা মোহাম্মদ মনসুর আলী - তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদেও সদস্য ও তৎকালীন কুষ্টিয়া-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, চুয়াডাঙ্গা ১ আসনের বিএনপির সাংসদ ছিলেন।

৩. হারুনুর রশিদ (বীর প্রতীক) - মহান মুক্তিযুদ্ধের খেতাবপ্রাপ্ত একজন মুক্তিযোদ্ধা।

৪. আকরাম হোসেন (বীর উত্তম) - মহান মুক্তিযুদ্ধের খেতাবপ্রাপ্ত একজন মুক্তিযোদ্ধা।

৫. সৃুরেন্দ্র মোহন ভট্টাচার্য - তিনি ছিলেন উনিশ শতকের বাঙালী ঔপন্যাসিক ও লেখক এবং হিন্দু ধর্মেও একজন পুরোহিত।

৬. অনন্ত হরি মিত্র - তিনি ছিলেন একজন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের প্রখ্যাত নেতা। তিনি ছিলেন অগ্নি যুগের একজন শহীদ বিপ্লবী ব্যক্তিত্য। তিনি ১৯২১ সনে অহযোগ আন্দোলনে যোগদান করেন এবং কৃষ্ণনগরে বিপ্লবী ক্রিয়াকলাপ সংঘটনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে থাকেন।

৭. মোজাম্মেল হক - তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও চুয়াডাঙ্গা ২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। এছাড়াও তিনি একজন বিশিষ্ট শিল্পপতি।

৮. কামরুজ্জামান দুদু - তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও চুয়াডাঙ্গা ১ আসনের দুই বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য।

৯. ফিরোজা বারি মালেক - সমাজ সেবিকা এবং প্রখ্যাত নারী নেত্রী। তিনি তার সমাজ সেবার মাধ্যমে দেশ ও জাতির কল্যাণে ব্যাপক কাজ করে গেছেন। যার ফলে ১৯৮২ সালে সমাজ সেবায় তাকে স্বাধীনতা পুরষ্কার প্রদান করা হয়।

১০. আবু সাঈদ ওমর আলী - তিনি একজন বাংলাদেশী ইসলামিক পন্ডিত, লেখক, সম্পাদক ও অনুবাদক। তিনি বাংলাদেশী ইসলামী ফাউন্ডেশনের বাংলাদেশের বিশ^কোষ প্রকল্পের পরিচালক ছিলেন ও সম্পাদনা পরিষদের সদস্য সচিব।

১১. মাওলানা ইমদাদুল হক - ইসলামি লেখক ও আলেম।

১২. মাওলানা আরশাদুল আলম - ইসলাম প্রচারক ও একজন প্রখ্যাত আলেম।

১৩. আব্দুস সেলিম - তিনি একজন বাংলাদেশী লেখক, শিক্ষাবিদ ও অনুবাদক। তিনি অনুবাদ সাহিত্যে বিশেষ অবদান রাখার জন্য ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমীর পুরষ্কার লাভ করেন।

 

আরও জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন -

পাবনা জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ ও বিস্তারিত বিরবণ,

টাংগাইল জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ ও বিস্তারিত বিরবণ,

সিরাজগঞ্জ জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ ও বিস্তারিত বিরবণ,

কুষ্টিয়া জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ ও বিস্তারিত বিরবণ,

যশোর জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ ও বিস্তারিত বিরবণ,

গাজীপুর জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ ও বিস্তারিত বিরবণ,

বাগেরহাট জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ ও বিস্তারিত বিরবণ,